মহানবী হযরত মোহাম্মদের (সা.) ব্যঙ্গচিত্র আঁকা সুইডিশ কার্টুনিস্ট লার্স ভিকস সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। সুইডেনের মিডিয়াগুলোতে এরই মধ্যে খবরটি নিশ্চিত করা হয়েছে।
তেলআবিব ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য টাইমস অব ইসরায়েল জানিয়েছে, রবিবার (৩ অক্টোবর) ভিকস পুলিশের একটি গাড়িতে চেপে সুইডেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় মার্ক ইয়ার্ড শহরে ভ্রমণ করছিলেন এই কার্টুনিস্ট। এ সময় বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে গাড়িটির সংঘর্ষ ঘটে।
ভয়াবহ ওই দুর্ঘটনায় পুলিশের দুই কর্মকর্তাও প্রাণ হারান এবং ট্রাকটির চালক আহত হন। ৭৫ বছর বয়সী ভিকস তার আঁকা ব্যঙ্গচিত্রের কারণে অতীতে হত্যার হুমকি পেয়েছিলেন। এ কারণে তিনি পুলিশি নিরাপত্তা নিয়ে সব যায়গায় চলাচল করতেন।
২০০৭ সালে তার আঁকা একটি ছবি প্রকাশিত হলে বহু মুসলিম ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ইসলাম ধর্মে মহানবীর (সা.) ছবি অঙ্কনের কোনো অনুমতি নেই। একে ধর্ম অবমাননার সামিল হিসেবেই দেখা হয়। ভিকস মহানবীর (সা.) ব্যঙ্গচিত্র আকার পর থেকেই তাকে নিয়ে বেশ সমালোচনা হচ্ছিল।
রবিবারের ওই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানোদের পরিচয় প্রকাশ করেনি পুলিশ। কিন্তু ভিকসের সঙ্গী এরই মধ্যে স্টকহোম থেকে প্রকাশিত ডাগেন নাইটার পত্রিকার কাছে তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিবৃতির মাধ্যমে জানানো হয়, পুলিশের গাড়ি এবং ট্রাকের মধ্যে কিভাবে সংঘর্ষ ঘটেছে; তা এখনো স্পষ্ট নয়। কিন্তু প্রাথমিকভাবে ঘটনাটির সঙ্গে অন্য কোনো পক্ষের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
বিশ্লেষকদের মতে, লার্স ভিকসের আঁকা সেই ব্যঙ্গচিত্র মুসলিম বিশ্বে এতটাই ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে যে সুইডেনের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ফ্রেডরিক রাইনফেল্ট পরিস্থিতি সামাল দিতে ২২টি মুসলিম দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। এর পরপরই মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম রাষ্ট্র ইরাকের সশস্ত্র সংগঠন আল-কায়েদা বিতর্কিত কার্টুনিস্ট লার্স ভিকসকে হত্যার জন্য এক লাখ ডলার পুরস্কার ঘোষণা করে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে ভিকস কোপেনহেগেনে বাক স্বাধীনতার উপর একটি বিতর্কে যোগ দেন। মূলত ওই অনুষ্ঠানটি বন্দুকধারীদের হামলার লক্ষ্যে পরিণত হয়।
সে সময় ভিকস জানান, তিনিই ছিলেন ওই হামলার লক্ষ্যবস্তু। কিন্তু সে সময় তিনি ওই হামলা থেকে বেঁচে ফিরেন। তবে ওই হামলায় এক চলচ্চিত্র পরিচালক প্রাণ হারান।