চলতি ডিসেম্বর মাসেই ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের করোনা প্রতিরোধে বুস্টার ডোজ (তৃতীয় ডোজ) দেয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) মন্ত্রিসভা বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সভাকক্ষ থেকে বের হওয়ার সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা জানান।
তিনি বলেন, বুস্টারের সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছি, আমরা বুস্টার ডোজ দেবো। যারা ষাটোর্ধ ব্যক্তি, ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার যারা আছে তাদেরও দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছি। এ বিষয়ে কার্যক্রম চলছে। নির্দেশনা আমরা দিয়েছি। সুরক্ষা অ্যাপে কিছু আপডেট করতে হবে। আমরা আশা করছি, এ মাসেই কাজ শুরু করতে পারবো।
বুস্টার ডোজ দিতে প্রস্তুতি চলছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের যে প্রস্তুতি সেটাও হয়ে যাবে। আইসিটির প্রস্তুতিটাও আমরা করে ফেলতে পারবো। একটা প্রায়োরিটি সেট (নির্ধারণ) করতে হয়। সেই অনুযায়ী যারা বয়স্ক বা মৃত্যু-ঝুঁকি বেশি তাদের আমরা আগে দেবো। যারা ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার তাদেরও দেবো। সবাইকে দেওয়ার পরে উন্মুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের হাসপাতালগুলো যেভাবে ছিল আমরা সেভাবেই রেখেছি। এটাকে আরো জোরদার করা হয়েছে। আমরা প্রায় ৮০টি জেনারেটর স্থাপন করছি, অক্সিজেন জেনারেটর। এর মধ্যে ৩০টি স্থাপনের কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে। বাকিগুলো আগামী অল্পদিনের মধ্যে দেশে আসলে আমরা লাগিয়ে দেবো।
টিকার বিষয়ে জানতে চাইলে জাহিদ মালেক বলেন, আমরা এ পর্যন্ত ১১ কোটি টিকা দিয়েছি। এ মাসে আরো দেড় থেকে দুই কোটি টিকার দেয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। টিকা আমাদের হাতে প্রায় ৪ কোটি আছে। আজকেও ইউকে থেকে ৪০ লাখ ডোজ টিকা পাবো। টিকার কোনো অসুবিধা নেই।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী জিজ্ঞেস করেছিলেন যে, স্কুলের ছাত্রদের টিকার অগ্রগতি। আমি বলেছি, সেখানে আমরা সেই রকম অগ্রগতি লাভ করতে পারিনি। যেহেতু ফাইজার দিতে হচ্ছে, দেশের সব কর্নারে তো কোল্ড চেইন নেই আমাদের সেভাবে। কাজেই যে কয় জায়গায় আছে সেখানেই টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা আমরা করছি। এটা যাতে আরো গতি বাড়ে, গতি যেন আনতে পারি সেজন্য আমরা কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। এক হাজার বুথ বাড়াবার নির্দেশনা দিয়েছে। আড়াই হাজার বুথ যেটা আছে তার সঙ্গে আরো এক হাজার যোগ হলে আমরা মনে করি, টিকা কার্যক্রম আরো বেগবান হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ওমিক্রনের বিষয়ে আপনারা যেটা জানেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম জিম্বাবুয়ে থেকে এসেছিল এবং তারা সোনারগাঁওয়ে কোয়ারেন্টাইনে ছিল। আমরা তাদের বেশ কয়েকবার টেস্ট করেছি এবং দুজনের ওমিক্রন পাওয়া গেছে। জিনোম সিকোয়েন্সিং করে আমরা এ তথ্য পেয়েছি। তারা এখন ভালো আছে, সুস্থ আছে। অন্য কোনো তৃতীয় ব্যক্তির গায়ে আমরা ওমিক্রন পাইনি। যারা হোটেলে আছে ও তাদের সংস্পর্শে এসেছে তাদেরও টেস্টের ব্যবস্থা আমরা করেছি। আমরা এখনো ভালো আছি। বর্ডার স্ক্রিনিং, এয়ারপোর্ট স্ক্রিনিংও আমরা এ কারণে জোরদার করেছি।
তিনি আরো বলেন, এই ভাইরাসটি এখনো খুব ক্ষতিকারক না। এটি সাংঘাতিক সংক্রামক কিন্তু মৃত্যুর খবর কোথাও আমরা পাইনি। আমাদের এজন্য সজাগ থাকতে হবে। গতকালও আমরা দেখেছি ১ দশমিক ৫ সংক্রমণের হার। এটি এখন কিছুটা বাড়তির দিকে। আমাদের মৃত্যুও ৬ হয়েছে গতকাল, এটা শূন্য, ১ বা ২-এ ছিল। স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমাদের চলতে হবে। টিকা যারা নেননি তাদের আহ্বান করবো টিকা নিয়ে আপনারা সুরক্ষিত হয়ে যান।