রাজধানীর নিউমার্কেটে ব্যবসায়ী ও ঢাকা কলেজের ছাত্রদের মধ্যকার সংঘর্ষের ঘটনায় আহত হয়ে আইসিইউতে থাকা নাহিদ হাসান (১৮) নামে এক যুবক মারা গেছেন। তিনি এলিফ্যান্ট রোডের বাটা সিগনাল এলাকায় একটি কুরিয়ার সার্ভিসে চাকরি করতেন।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ওয়ানস্টপ ইমার্জেন্সি সেন্টারের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার (১৯শে এপ্রিল) রাত ৯টা ৪০ মিনিটে তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন আইসিইউতে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তৌফিক এলাহী।
নাহিদের স্ত্রী ডালিয়া আক্তার জানান, সকালে কামরাঙ্গীরচর দেওয়ান বাড়ি এলাকার বাসা থেকে তিনি কর্মস্থলে আসেন। পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্বামী নাহিদের হাসপাতালে ভর্তির সংবাদ পান। নিউমার্কেট এলাকায় সংঘর্ষের সময় আহত অবস্থায় নাহিদ রাস্তায় পড়েছিলেন।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার (১৮ই এপ্রিল) রাত ১২টার দিকে। তখন নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ শুরু হয়, যা চলে রাত আড়াইটা পর্যন্ত। মধ্যরাতে দুই পক্ষকে ওই এলাকা থেকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।
তখন শিক্ষার্থীরা জানিয়েছিলেন, ঢাকা কলেজের মাস্টার্সের দুই শিক্ষার্থী রাত ১২টার দিকে নিউমার্কেটে কেনাকাটা করতে যান। কেনাকাটা নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়।
একপর্যায়ে দুই শিক্ষার্থীকে ছুরিকাঘাত করা হয়- এমন খবর ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে নিউমার্কেট এলাকায় যায় ঢাকা কলেজের একদল শিক্ষার্থী। পরে ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।
পরদিন মঙ্গলবার সকাল থেকে নীলক্ষেত মোড়ে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এসময় ব্যবসায়ীরা সড়কে চলে এলে দ্বিতীয় দফায় শুরু হয় সংঘর্ষ। সকাল সাড়ে ১০টার পর নীলক্ষেত মোড় থেকে সায়েন্সল্যাব পর্যন্ত এলাকায় থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ।
সংঘর্ষের একপর্যায়ে বেলা ১১টার দিকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা কলেজের গেটে এবং ব্যবসায়ীরা চন্দ্রিমা সুপার মার্কেটের সামনের সড়কে অবস্থান নেন।
এরপর ব্যবসায়ীরা নিউমার্কেট, গাউসিয়া মার্কেট, চন্দ্রিমা মার্কেট, চাঁদনী চক, ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট এলাকায় জড়ো হয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে।
এদিকে আহতদের মধ্যে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন বেশ কয়েকজন। আবার অনেকে চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছেন বলে জানা গেছে।
এছাড়া দুপুরে ঢাকা কলেজের আবাসিক হল আগামী ৫ই মে পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করে বিকেলের মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশনা দেওয়া হয়।