নতুন সিনেমা হল নির্মাণ ও সংস্কারে সরকার ঘোষিত এক হাজার কোটি টাকার সহজ ঋণ তহবিলের সুবিধা ও সুষ্ঠু ব্যবহার নিয়ে শতাধিক হল মালিক ও উদ্যোক্তাদের সাথে ফলপ্রসূ মতবিনিময় করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
বৃহস্পতিবার (১২ মে) দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে তথ্য ভবন মিলনায়তনে এ বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় আয়োজিত মতবিনিময় সভায় সারাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যোগ দেয়া শতাধিক সিনেমা হল মালিকদের সাথে আলোচনা শেষে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী বলেন, সহজ শর্তে এই ঋণ সুবিধা নিয়ে প্রতি জেলা ও উপজেলায় সিনেপ্লেক্স ও হল নির্মাণের মধ্য দিয়ে আগামী দেড়-দুই বছরের মধ্যে সারাদেশে কয়েকশত সিনেমা হল চালু হওয়া সম্ভব। আমরা চাই আমাদের সিনেমা শিল্প বিশ্ব অঙ্গনে জায়গা করে নেবে।
চলচ্চিত্রকে সংস্কৃতির বিশাল এক অনুসঙ্গ হিসেবে বর্ণনা করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, চলচ্চিত্র তথা সিনেমা হলের বিকাশ সমাজকে বিপথগামিতা থেকে রক্ষায় সহায়ক। তরুণ সমাজকে মাদকাসক্তি ও জঙ্গিবাদ থেকে রক্ষা করার ক্ষেত্রেও সিনেমা শিল্প বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
সভায় সিনেমা হল মালিকবৃন্দ সহজ শর্তে এক হাজার কোটি টাকার ঋণ তহবিল গঠনকে দেশের চলচ্চিত্র শিল্পের পুণরুজ্জীবনের জন্য যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে বর্ণনা করেন। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস বলেন, হল পরিচালনার স্বার্থে দেশে সিনেমার মান উন্নয়ন ও সংখ্যাবৃদ্ধির পাশাপাশি শতকরা অন্তত ২০ ভাগ হিন্দি সিনেমা আমদানি করা বিশেষ প্রয়োজন।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মকবুল হোসেনের সভাপতিত্বে অতিরিক্ত সচিব ফারুক আহমেদ, চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন, চলচ্চিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুজহাত ইয়াসমিন, চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ, বাংলাদেশ ব্যাংক ও সোনালী, রূপালী, অগ্রণী, জনতা, ইউসিবি, মেঘনা, বিডিবিএল ও ইউনিয়ন ব্যাংকের প্রতিনিধিবৃন্দ এবং রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের শতাধিক সিনেমা হলের মালিক ও আগ্রহী উদ্যোক্তাবৃন্দ সভায় অংশ নেন। সভার শুরুতে হল মালিকদের পক্ষ থেকে মন্ত্রী ও সচিবকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা সুদীপ্ত কুমার দাস।
উল্লেখ্য, দেশের চলচ্চিত্র শিল্পে নতুন প্রাণ সঞ্চারের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ ব্যাংককে ১০০০ কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল গঠনের অনুরোধ জানায়। সে প্রেক্ষিতে গত বছরের ফেব্রুয়ারি ও মার্চে বাংলাদেশ ব্যাংক দু’টি পরিপত্রের মাধ্যমে সকল তফসিলভুক্ত ব্যাংক থেকে নতুন সিনেপ্লেক্স বা সিনেমা হল নির্মাণে সর্বোচ্চ ১০ কোটি এবং সংস্কারে সর্বোচ্চ ৫ কোটি টাকা ঋণের ব্যবস্থা করেছে। দেশে মেট্রোপলিটন এলাকাগুলোতে ৫ শতাংশ ও এর বাইরের এলাকায় সাড়ে ৪ শতাংশ সুদে ৮ বছর মেয়াদী এ ঋণ সুবিধা রাখা হয়েছে।