বিশ্বজুড়ে চলমান করোনা মহামারিতে প্রতিদিনই ওঠা-নামা করছে করোনায় মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা আরো বেড়েছে। একইসঙ্গে আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও।
গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সাড়ে ১৬শ’র বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছেছে প্রায় সাড়ে ৬ লাখে। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬০ কোটি ২১ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৬৪ লাখ ৭৫ হাজার।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে জাপানে। অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে ব্রাজিল, ইতালি, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স ও রাশিয়া।
বুধবার (২৪ আগস্ট) সকালে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত, মৃত্যু ও সুস্থতার নিয়মিত আপডেট দেয়া ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১ হাজার ৬৫৪ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে চার শতাধিক। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৬৪ লাখ ৭৫ হাজার ৭১৭ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬ লাখ ৪৫ হাজার ৬০ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬০ কোটি ২১ লাখ ৬৭ হাজার ১৬৫ জনে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে জাপানে। এই সময়ের মধ্যে দেশটিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৮৫ হাজার ৪৯৭ জন এবং মারা গেছেন ২৬৯ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৭৩ লাখ ২৫ হাজার ২৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৩৭ হাজার ২৭৭ জন মারা গেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৫০ হাজার ৮৬৮ জন এবং মারা গেছেন ২৬৬ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৯ কোটি ৫৫ লাখ ৩৫ হাজার ১৫৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১০ লাখ ৬৬ হাজার ৩৮৮ জন মারা গেছেন। একই সময়ে দক্ষিণ কোরিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৫০ হাজার ৯৮ জন এবং মারা গেছেন ৫২ জন।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে চতুর্থ ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৯৫ জন এবং নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ২০ হাজার ২৪১ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৩ কোটি ৪৩ লাখ ১১ হাজার ৩২৩ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ৮২ হাজার ৯৪১ জনের।
ফ্রান্সে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২৮ হাজার ৯৮৮ জন এবং মারা গেছেন ৮৮ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৩ কোটি ৪৩ লাখ ৮৭ হাজার ৬১২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৫৩ হাজার ৭০৫ জন মারা গেছেন। একইসময়ে ইরানে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ২২৭ জন এবং মারা গেছেন ৫৬ জন।
ইতালিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৫ হাজার ৩৫৭ জন এবং মারা গেছেন ১৩৪ জন। করোনা মহামারির শুরু থেকে ইউরোপের এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ১৬ লাখ ৯৬ হাজার ২৪২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৭৪ হাজার ৯৩১ জন মারা গেছেন। একইসময়ে তাইওয়ানে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১৬ জন এবং নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ২৬ হাজার ৩৮২ জন।
রাশিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৬৯ জন এবং নতুন করে ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন ৩০ হাজার ৯৬৭ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৯১ লাখ ৮১ হাজার ৩৭১ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ৮৩ হাজার ৬৮৬ জনের। একইসময়ে নিউজিল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৮২৭ জন এবং মারা গেছেন ৩৪ জন।
এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় অস্ট্রেলিয়ায় নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৪৮৩ জন এবং মারা গেছেন ৯৪ জন। একইসময়ে থাইল্যান্ডে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৪৮৮ জন এবং মারা গেছেন ২৬ জন। চিলিতে নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪ হাজার ৫৪১ জন এবং মারা গেছেন ১২ জন।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে ‘বৈশ্বিক মহামারি’ হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি।