বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি হচ্ছে গণতন্ত্রের বস্ত্র হরণকারী দল। তাদের মুখে গণতন্ত্রের বুলি শোভা পায় না। এই মুহূর্তে বিএনপির মাথা ঠিক নেই, তারা কখন যে কি বলে। তাদের দলের সম্মেলন কবে হয়েছে মীর্জা ফখরুলের মনে আছে কিনা আমার তা জানা নাই। অথচ আমাদের হাজার হাজার সম্মেলন হয়েছে। যে দলের মধ্যে গণতন্ত্রের চর্চা নেই, সেই দল কিভাবে গণতন্ত্রের কথা বলে।
আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলের প্রধান কার্যালয় বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ উপকমিটির শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির শাসনামলে বারবার গণতন্ত্রের উপর আঘাত এসেছে। তাদের আমলেই সকাল ১১ টার মধ্যেই ভোটকেন্দ্রের ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। তারাই এদেশে প্রথম ভোট চুরির প্রথা চালু করেছে। তারা হাঁ, না, ভোট চালু করে ক্ষমতায় এসেছে, নির্বাচনের আগে তারা ১ কোটি ভূয়া ভোটার তৈরি করেছে। এটাই কি তাদের গণতন্ত্র ? মির্জা ফখরুলদের লজ্জা পাওয়া উচিত। বিএনপির মুখে গণতন্ত্রের কথা শোভা পায় না।
এ সময় সড়ক ও সেতু মন্ত্রী বলেন, শত বাধা-বিপত্তির মধ্যেও গণতন্ত্র বিকাশে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। গণতন্ত্রকে রক্ষা করার আন্দোলনে অগ্রভাগে ছিলেন আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা, তবে গণতন্ত্র একটি বিকাশমান প্রক্রিয়া, আমরা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছি। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এদেশে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে চাই।
তিনি বলেন, আমাদের জাতীয় সম্মেলনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশে সৈয়দপুরে আমাদের দলীয় নেতাকর্মীদের উপস্থিতিতে ২৭০০০ কম্বল বিতরণ করেছি। দেশের যে কোন দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ানো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইতিহাস এবং এটাই আমাদের ঐতিহ্য। শীত শুরু থেকে এ পর্যন্ত সরকারিভাবে সারাদেশে ২৭ লক্ষ ৬০ হাজার কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও আমাদের দলীয় নেতাকর্মীরা এলাকাভিত্তিক শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে। শীত যতদিন থাকবে, ততদিন আমাদের এই শীত বস্ত্র বিতরণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। যেকোনো ক্ষতিগ্রস্তের পাশে দাঁড়ানো আমাদের রুটিন ওয়ার্ক।
এ সময় বিএনপি’র তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রসঙ্গে সড়ক ও সেতুমন্ত্রী বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার একটি মৃত ইস্যু এদেশে। আগামী নির্বাচন হবে অবাধ নিরপেক্ষ সুষ্ঠু ও অংশীদারিত্ব মূলক। সরকার শুধু তার রুটিন দায়িত্ব পালন করবে। যা বিশ্বের অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে হয়ে থাকে। বিএনপি নির্বাচনে হেরে যাবে এই ভয়ে এবং সরকারের উন্নয়নে অর্জনে দিশেহারা হয়ে বিদেশীদের কাছে নালিশ করে। তারাও এদেশে আসে সবকিছু জেনে বুঝে আবার চলেও যায়।
এদেশ কারও ফরমায়েশ চলবে না, বাংলাদেশের গণতন্ত্র চলবে আমাদের প্রচলিত আইন অনুযায়ী। দেশে নির্বাচন হবে আমাদের সংবিধান অনুযায়ী। আগামী নির্বাচন অবাধ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু হবে এ নিয়ে কোন সংশয় নাই। বিএনপি যদি সরকার পরিবর্তন করতে চাই তাহলে তাদের নির্বাচনে আসতে হবে, ভোটে জিততে হবে। তাছাড়া সরকার পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনাও নাই। বিদেশি পর্যবেক্ষকদের নির্বাচনে আমরা স্বাগত জানায়। নির্বাচনী পর্যবেক্ষক দল পৃথিবীর যেখান থেকেই আসে আসুক, তাতে আমাদের কোন আপত্তি নাই, এবং তাদের উপর কোন বিধিনিষেধও নাই।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন উপকমিটির বিষয়ে সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন,
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে নেত্রীর সাথে কথা বলে উপ কমিটির চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হবে। তবে তা উপদেষ্টা পরিষদের মধ্য থেকেই উপ কমিটির চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হয়। এবার প্রত্যেকটি উপ কমিটির আকার হবে সর্বোচ্চ একশত।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, দলের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক সম্পাদক ডা: রোকেয়া সুলতানা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য গোলাম রব্বানী চিনুসহ ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ।
এসময় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সহসভাপতি ডাক্তার দিলীপ রায় সাংগঠনিক সম্পাদক আক্তার হোসেন দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ প্রমুখ।