বার্তা৭১ ডটকম: গত তিন বছরে তিনবার আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ও ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠলেও শিরোপা জিততে পারেনি ভারত। তাই টি-টোয়েন্টি বিশ^কাপের নবম আসরের শিরোপা জিততে দলের খেলোয়াড়রা মরিয়া ছিলো বলে জানান চ্যাম্পিয়ন ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা। গতরাতে বিশ্বকাপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৭ রানে হারিয়ে শিরোপা জিতে টিম ইন্ডিয়া।
ম্যাচ শেষে রোহিত জানান, গত তিন বছরে তিন বার আইসিসির টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠেও শিরোপা জিততে পারিনি আমরা। এজন্য এবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিততে মরিয়া ছিল সবাই।
২০১৯-২০২১ মৌসুমে অনুষ্ঠিত টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের প্রথম আসরের ফাইনালে উঠে ভারত। ২০২১ সালের জুনে ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটনে অনুষ্ঠিত ঐ ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের কাছে ৮ উইকেটে হেরে যায় টিম ইন্ডিয়া।
২০২১-২৩ মৌসুমে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পরের আসরেরও ফাইনালে জায়গা করে নেয় ভারত। দ্বিতীয় আসরের ফাইনালেও কপাল পুড়ে টিম ইন্ডিয়ার। ২০২৩ সালের জুনে ইংল্যান্ডের ওভালে অনুষ্ঠিত ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ২০৯ রানের বিশাল ব্যবধানে হারে ভারত।
২০২৩ সালের অক্টোবর-নভেম্বরে ঘরের মাঠে ওয়ানডে বিশ্বকাপে লিগ পর্বসহ টানান দশ ম্যাচ জিতে ফাইনালের মঞ্চে নাম লেখায় রোহিত শর্মার দল। কিন্তু ফাইনাল হারের দুর্ভাগ্য পিছু ছাড়েনি ভারতের। আহমেদাবাদের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে ৬ উইকেটে হেরে যায় টিম ইন্ডিয়া।
টানা তিন বছর আইসিসি তিন ফাইনাল হেরে শিরোপার জন্য মুখিয়ে ছিল ভারত। অবশেষে যুক্তরাষ্ট্র ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে অনুষ্ঠিত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতে ফাইনাল হারের তকমা মুছতে পারে টিম ইন্ডিয়া।
এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের জন্য খেলোয়াড়রা মুখিয়ে ছিলো বলে জানান রোহিত। তিনি বলেন, ‘গত তিন-চার বছর ধরে কেমন কেটেছে আমাদের, সেগুলো বলা খুবই কঠিন। পর্দার আড়ালেও অনেক কিছু হয়েছে। আমরা আজ যা করেছি, সেটি নয়। আমরা আগে যা করেছি সেগুলোর ফল। আমরা অনেক চাপের ম্যাচ খেলেছি, শেষে ভুলগুলো কাটিয়ে উঠেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘চাপের মধ্যে কি করতে হবে, ছেলেরা ভালোভাবেই বুঝতে পারে। আজ ছিলো তার নিখুঁত উদাহরণ। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেলে কি করতে হবে আজ সবাই সেটা করেছে। আমরাসবাই মন থেকে খুব করে ট্রফি জিততে চেয়েছি। সবাই মরিয়া ছিল। আমি এই দল , ম্যানেজমেন্ট ও কোচিং স্টাফদের নিয়ে গর্বিত।’
ফাইনাল জয়ের মুহূর্তটা ধরে রাখার ইচ্ছ পোষণ করেন রোহিত। তিনি বলেন, ‘আমি এটা খুব করে চেয়েছি। ঐ মুহূর্তটার কথা ভাষায় প্রকাশ করা খুব কঠিন। আমি বলতে চাই না, তখন আমার মনের মধ্যে কি চলছিল। কিন্তু আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে এটা খুব আবেগের মুহূর্ত ছিল। যদি আমি নিজে মুহূর্তটা ধরে রাখতে পারতাম, কিন্তু সেটি সম্ভব না। কিন্তু আমি এটা সব সময় মনে রাখবো। এমন মুহূর্তের জন্যই আপনারা সবাই অপেক্ষা করেন এবং ওই সময়ের জন্য পরিকল্পনা করেন। আপনি নির্দিষ্ট একটা বিষয়ের জন্য জীবনে মরিয়া থাকেন। আমার জীবনে এটার জন্য আমি মরিয়া ছিলাম। এবার আমরা লক্ষ্য পূরণ করতে পেরেছি বলে খুব খুশি।’
বিশ্বকাপের শুরু থেকে ব্যাট হাতে সুপার ফ্লপ ছিলেন ভারতের সেরা ব্যাটার কোহলি। তারপরও কোহলির উপর আস্থা ছিলো দলের। ফাইনালের আগে ৭ ইনিংসে ৭৫ রান করেছিলেন কোহলি। তবে ফাইনালের মঞ্চে কথা বলে কোহলির ব্যাট। তার ৫৯ বলে ৭৬ রানের ইনিংসের কল্যাণে লড়াই করার পুঁিজ পায় ভারত।