বার্তা৭১ ডটকমঃ টাঙ্গাইলে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় একজন শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নয়জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকায় লিয়াজোঁ অফিসে বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের (সিন্ডিকেট) সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সাময়িক বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীরা হলেন কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের মনিরুল ইসলাম, অপরাধ তত্ত্ব ও পুলিশ বিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের সাঈদুর রহমান, রসায়ন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের এস এম রবিউল হাসান, পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের প্রথম বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের ওমর ফারুক, টেক্সটাইল প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের মো. ওমর ফারুক, একই বিভাগের তৃতীয় বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের মোহাইমিনুল কায়উম, কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের আশিকুর রহমান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রথম বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টারের এম এ আহাদ খান এবং একই বিভাগের প্রথম বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের বাবু কিশোর দে।
সহকারী প্রক্টর আজিজুল হক জানান, উপাচার্য মোহাম্মদ আলাউদ্দিনের সভাপতিত্বে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রক্টরিয়াল কমিটির প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নয়জন শিক্ষার্থীকে ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত হয়। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য শরীফ এনামুল কবিরকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সদস্যসচিব করা হয়েছে প্রক্টর খাদেমুল ইসলামকে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য আমির হোসেন খান, এ কে এম সায়েদুল হক চৌধুরী ও হাবিবুর রহমান।
সহকারী প্রক্টর আরও জানান, সভায় বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্তের অনুমোদন দেওয়া হয়। এ ছাড়া এ ব্যাপারে মামলা করারও সিদ্ধান্ত হয়।
ছাত্রলীগের বিবৃতিতে
এদিকে এ ঘটনায় ছাত্রলীগের কাঁধে দোষ চাপিয়ে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলম। ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক শেখ রাসেল স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ অভিযোগ করা হয়।
যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রলীগের শীর্ষ দুই নেতা বলেন, মাওলানা ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত সংঘর্ষের ঘটনায় ছাত্রলীগকে জড়িয়ে গণমাধ্যমে যে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে তা বস্তুনিষ্ঠ ও তথ্যনির্ভর নয়। কারণ, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কোনো সাংগঠনিক কাঠামো নেই। মাওলানা ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে এ পর্যন্ত ছাত্রলীগের কোনো কমিটিও ঘোষণা করা হয়নি। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীÿবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান তাঁরা।
গতকাল বুধবার দুপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাধ তত্ত্ব ও পুলিশ বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তর শ্রেণির ছাত্র মোশারফ হোসেন নিহত হন। তিনি নিজেকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি দাবি করে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়।