বার্তা৭১ডটকমঃ আমাদের সমাজে সফল ব্যবসায়ীর তালিকায় নারীর সংখ্যা খুব একটা নেই বললেই চলে। এর পিছনে বিভিন্ন ধরনের মানুষিক, পারিবারিক এবং সামাজিক কারন সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। তারপরেও কিছু কিছু নারী পিছপা হয়ে থাকেনি। সকল বাঁধা পেরিয়ে নিজেদেরকে সাফল্যের শিখরে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে। বর্তমানে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা পূর্বের তুলনায় সহজ। একজন জয়ী ব্যবসায়ী নারী হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে অবশ্যই করনীয় কিছু পদবিন্যাসগুলো কি কি হতে পারে। কেন আপনি একটি ব্যবসা শুরু করতে চান? এই প্রশ্নটি অনেকটা অপ্রত্যাশিত হতে পারে কিন্তু এটি একটি নীরব ফ্যাক্টর যা নির্ধারণ করে যে আপনি একজন উদ্যোক্তা হিসেবে সফল হবেন নাকি ব্যর্থ হবেন। যিনি নিজের মেধা খাটিয়ে পণ্য উৎপাদনের জন্য কোন ব্যবসায়ীক উদ্যোগ গ্রহন করেন তাকে বলে উদ্যোক্তা। আর তার নতুন উদ্যোগকে বলে ষ্টার্টআপ। নতুন উদ্যোগের বিষয়ে একজন উদ্যোক্তাকে যে সব বিষয়ের উপর লক্ষ্য রাখতে হয় তাহল ব্যবসায়িক কলাকৌশল, পদ্ধতি ও নিয়ম-কানুন। ব্যবসা শুরু করার পূর্বে এসব জানা প্রয়োজন। যে কোন ব্যবসায়ের শুরুতে প্রথম যে কাজটি চ্যালেঞ্জিং সেটি হল বিজনেস প্লান। বিজনেস প্লান মূলত এমন একটি বিষয় যেটি আপনি কিভাবে ব্যবসা শুরু করবেন, কোন পথে এগোবেন, আপনার রিসোর্স কি কি আছে, সমস্যা ও সুবিধাগুলো কি কি এবং বিজনেস সংক্রান্ত আরো অন্যান্য কী পয়েন্টগুলো ফোকাস করে। ব্যবসাকে তার মতো করে এগিয়ে নিতে প্লানিংয়ের কোন বিকল্প নেই।
ব্যবসা নির্ধারণ এবং প্রাথমিক কর্মকাণ্ডসমূহ:
সফল ব্যবসার জন্য এখন বলিষ্ঠ উদ্যোক্তার প্রয়োজন। এই উদ্যোক্তা প্রথমেই নির্ধারণ করবেন পণ্য বা সেবাটি কি এবং ব্যবসাটি কোথায় অবস্থিত হবে। এসব নির্ধারণের উপর ভিত্তি করে, একটি ব্যবসার সম্ভাব্যতা যাচাই এর জন্য স্টাডি পরিচালনা করতে হবে এবং প্রস্তাবিত ব্যবসার একটি সংক্ষিপ্ত প্রোফাইল প্রস্তুত করতে হবে। অতঃপর উদ্যোক্তাকে একটি ব্যবসায় পরিকল্পনা প্রস্তুত করতে হবে। প্রোজেক্টের ধরণ, স্থান, বিনিয়োগ এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর ভিত্তি করে, একজন উদ্যোক্তাকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠার পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য অগ্রসর হতে হবে।
ব্যবসা নির্ধারণ এবং প্রাথমিক কর্মকাণ্ডসমূহ যেসকল বিষয়ের সাথে জড়িতঃ
পণ্য বা সেবা নির্বাচন।
জায়গা নির্বাচন।
ব্যবসার সম্ভাব্যতা যাচাই।
ব্যবসায় পরিকল্পনা প্রস্তুত করা।
একটি সুষ্ঠু কর্মপরিকল্পনা পর্যায়ক্রমে একজন ব্যবসায়ীকে তার লক্ষ্যের দিকে পৌছাতে সাহায্য করে। সঠিক দিকনির্দেশনা অনুযায়ী সামনে না অগ্রসর হলে বিনিয়োগের ক্ষতি হতে পারে।
স্টার্টআপ বিজনেস প্লান
একটি সাধারণ স্টার্টআপ বিজনেস প্লানে মিশন স্টেটমেন্ট, কী টু সাকসেস,মার্কেট এনালাইসিস, ব্রেক ইভেন্ট পয়েন্ট এই বিষয়গুলোর একটা সংক্ষিপ্ত দিক নির্দেশনা থাকে।
ইনফরমেশনগুলো কিভাবে সাজাতে হয় বা লিপিবদ্ধ করতে হয় যাতে একজন ইনভেস্টর আগ্রহী হয়? এই প্রশ্নের আউট লাইনটাই একটা ভালো বিজনেস প্লান আপনাকে প্রোভাইট করতে পারে।
বিজনেস প্লানের জন্য কি ধরনের ইনফরমেশন প্রয়োজন হয়?
বাংলাদেশে একজন উদ্যোক্তা হতে হলে যে কাজগুলো করতে হবেঃ
প্রথমেই কি ব্যবসা করবে সেটা নির্ধারণ করতে হবে।
মূলধন যোগার করতে হবে।
ব্যবসা যৌথ মালিকানাধীন হলে কে পার্টনার হবে তা নির্বাচন করতে হবে।
ব্যবসার জন্য উপযুক্ত স্থান নির্বাচন করে তা ভাড়া/লীজ/কিনে নিতে হবে।
ব্যবসার গঠন বা কাঠামো অনুযায়ী ট্রেড লাইসেন্স অথবা কোম্পানী রেজিষ্ট্রেশন করতে হবে।
নির্ধারিত জায়গায় শিল্প স্থাপন করতে হবে।
শিল্প প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, পয়ঃসংযোগ প্রভৃতি ইউটিলিটি সার্ভিস নিশ্চিত করতে হবে।
যথাযথ পদ্ধতি মেনে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও যন্ত্রাংশ ক্রয়, কাঁচামাল ক্রয় এবং টেকনোলজি/প্রযুক্তি নির্বাচন করতে হবে।
যথাযথ পদ্ধতি মেনে প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দিতে হবে।
ব্যবসার পরিকল্পনা অনুযায়ী পণ্য উৎপাদন ও বিপণন করতে হবে।
মূলধন ও সম্পদ ব্যবসার জন্য অত্যাবশ্যকীয় হলেও মূখ্য বিষয় নয়, কেননা সঠিক দিকনির্দেশনা অনুযায়ী অগ্রসর না হলে তাতে বিনিয়োগের অনেক ক্ষতি হতে পারে। তাই ব্যবসা শুরুর পূর্বে অবশ্যই বিজনেস স্টার্টআপ তৈরী করতে হবে।
এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের নিবন্ধন ও লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হয় যেমন-
পরিবেশ ছাড়পত্র,
ফায়ার লাইসেন্স,
ফ্যাক্টরী স্থাপনার রেজিষ্ট্রেশন,
অবকাঠামো ও ইউটিলিটি সার্ভিস,
ট্যাক্স ও ভ্যাট, কোয়ালিটি সার্টিফিকেশন,
বয়লার রেজিষ্ট্রেশন, পেটেন্ট,
ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস রেজিষ্ট্রেশন,
আমদানি ও রপ্তানি পদ্ধতি,
পণ্য উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থাপনা
ডা.তানজিনা আফরোজ
ডেন্টাল সার্জন ও উদ্যোক্তা