বার্তা৭১ ডটকমঃ রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিম শিপনকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
সোমবার (৯ নভেম্বর) রাত থেকে বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) হারুন আর রশিদ।
তিনি জানান, এএসপি আনিসুল করিমকে হত্যার ঘটনায় এখনো পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তারা হত্যার দায় স্বীকার করেছে। এই ঘটনার সঙ্গে যারা যারা জড়িত তাদের সকলকেই আইনের আওতায় আনা হবে।
গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিন করে রিমান্ড চাওয়া হবে। এছাড়া হাসপাতালটি পরিচালনায় সরকারি কোন অনুমোদন ছিল না বলে জানান তিনি।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালে কর্মচারীদের পিটুনিতে পুলিশের সিনিয়র এএসপি আনিসুল করিমের মৃত্যুর ঘটনায় আদাবর থানায় হত্যা মামলা করা হয়।
উল্লেখ্যে, পারিবারিক ঝামেলার কারণে আনিসুল মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। সোমবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আনিসুলকে মাইন্ড এইড হাসপাতালে আনা হয়। হাসপাতালটিতে ভর্তির কিছুক্ষণ পরই কর্মচারীদের পিটুনিতে তার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করে পরিবার।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলে, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করায় কর্মচারীরা তাকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন।
ঘটনার পর হাসপাতালের অ্যাগ্রেসিভ ম্যানেজমেন্ট রুমে তাকে মারধরের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে দেখা যায়, হাসপাতালে ঢোকার পরই আনিসুলকে ৬-৭ জন টেনেহেঁচড়া একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন। হাসাপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ তখন তাদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। মাথার দিকে থাকা দুজন হাতের কনুই দিয়ে তাকে আঘাত করছিলেন।
এ সময় একটি কাপড়ের টুকরা দিয়ে শিপনের হাত পেছনে বাঁধা হয়। চার মিনিট পর তাকে যখন উপুড় করা হয়, তখনই ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে অচেতন হয়ে পড়েন শিপন। এ ঘটনায় গত রাতে প্রথমে ছয়জনকে আটক করে পুলিশ। পরে আরো একজনকে আটক করা হয়।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র আনিসুল করিম ৩১ বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। এক সন্তানের জনক আনিসুলের বাড়ি গাজীপুরে। সর্বশেষ আনিসুল করিম বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনারে দায়িত্বে ছিলেন।
আনিসুল করিমের ভাই রেজাউল করিম বলেন, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগে ভুগছিলেন আনিসুল। কিন্তু সেগুলো গুরুতর নয়। হাসপাতালে পিটুনিতেই তার মৃত্যু হয়েছে।