বার্তা৭১ ডটকমঃ আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, আইনের শাসনের প্রতি বঙ্গবন্ধুর ছিল অগাধ বিশ্বাস। আদালতের প্রতি ছিল গভীর আস্থা এবং ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ছিল তাঁর দৃঢ়তা।
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে উপলব্ধি করেছিলেন যে, মানুষের দুর্দশা লাঘবের শেষ আশ্রয়স্থল হচ্ছে আদালত। তাই তিনি সংবিধান প্রণয়নের সময় বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে গুরুত্ব দিয়ে সংবিধানে স্থান দিয়েছিলেন।’
বুধবার সংসদে মুজিববর্ষ উপলক্ষে জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে সাধারণ প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বিচারপ্রাপ্তিতে জনগণের যেন কোনো দুর্ভোগ পোহাতে না হয়, সেজন্য তিনি সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদে বিচার বিভাগ পৃথকীকরণের কথা বলেছেন। তিনি সংবিধানের ৯৪ এর ৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিচারকার্যে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি এবং সুপ্রিমকোর্টের বিচারকদের স্বাধীনতার কথা নিশ্চিত করে গেছেন।’
আনিসুল হক বলেন, ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর বিচার বিভাগের সেই পৃথকীকরণ ও স্বাধীনতা স্বপ্নই রয়ে গিয়েছিল। যদিও মাজদার হোসেন মামলার রায়ের পথ ধরে ২০০০ সালের ১ নভেম্বর বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ হয়। কিন্তু পৃথক কোনো ভৌত অবকাঠামো ছিল না বলে তা সম্পূর্ণ কার্যকর হতে পারেনি।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর ২ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা ব্যয়ে সারাদেশে ১২ তলা বিশিষ্ট চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন, ১৬৩ কোটি টাকা ব্যয়ে আগের জেলা জজ ও দায়রা জজ আদালত ভবনগুলো উর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ, বিচারকদের প্রায় ১০০ ভাগ বেতন বৃদ্ধি এবং তাদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ৩৭১টি গাড়ির ব্যবস্থা করে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ শুধু অর্থবহই করেননি, জনগণের ন্যায় বিচার প্রাপ্তির পথ সুগম করেছেন। এটিই হচ্ছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা কর্তৃক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নের এক উজ্জল দৃষ্টান্ত।
আইনমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারই বাংলাদেশের দক্ষ জুডিসিয়ারী গড়ে তোলার লক্ষ্যে ডিজিটাইজেশনের কার্যক্রম গ্রহণের পাশাপাশি বিগত মাত্র সাড়ে ৩ বছরে অস্ট্রেলিয়া, চীন, জাপান ও ভারতে ৭৫৪ জন বিচারককে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছেন। ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে নতুন নতুন আদালত, ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠাসহ অধঃস্তন আদালতে ১ হাজার ১২৮ জন বিচারক নিয়োগ দিয়েছেন।
আনিসুল হক বলেন, দেশের সাধারণ মানুষের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ছিল গভীর মমত্ববোধ। তিনি দেশের মানুষকে ভালবাসা দিয়ে জয় করে নিয়েছিলেন এবং বাংলার মানুষও তাঁকে সবকিছু দিয়ে ভালবেসেছিলেন।
আজকে সোনার বাংলা বিনির্মাণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এগিয়ে যাচ্ছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘কিংবদন্তি নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকীতে আমরা শপথ নেই যে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে সোনার বাংলা গড়ে তুলবো। বঙ্গবন্ধুর প্রতি আমাদের ঋণ শোধ করবো।’