বার্তা৭১ ডটকমঃ ভাস্কর্যের বিরোধিতার নামে উগ্র মৌলবাদী গোষ্ঠী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করছে বলে মন্তব্য করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।
বৃহস্পতিবার (৩ ডিসেম্বর) শিক্ষক সমিতির সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক মো. লুৎফর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক নিজামুল হক ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। সেই সাথে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বিরোধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠনটি।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, সম্প্রতি একটি ধর্মান্ধ উগ্র মৌলবাদী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী কর্তৃক রাজধানীর ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করার নামে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি কটাক্ষ ও অবমাননা প্রদর্শন করছেন যা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল। আমরা মনে করি উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে পাকিস্তানী কায়দায় ইসলামকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে করে হীন রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার উদ্দেশ্য নিয়ে একটি গোষ্ঠী ভাস্কর্য আর মূর্তিকে একাকার করে সরলপ্রাণ মানুষকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছেন।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশের মানুষ ঐতিহ্যিকভাবে ধর্মপ্রাণ এবং ভিন্ন মত ও পথের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। এদেশের মানুষকে কখনোই ধর্মের নামে বিভ্রান্ত করা যায়নি এবং ভবিষ্যতেও যাবে না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের সাম্প্রদায়িক বিভাজন নীতি, ধর্মের নামে রাজনৈতিক হীন স্বার্থসিদ্ধির অপকৌশল এবং বাঙালি সংস্কৃতি বিরোধী রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপের প্রতিবাদে এদেশের স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। লক্ষ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত এ রাষ্ট্রের মৌলিক দর্শন হলো অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক চেতনা।
শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, আদতে তারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যকে মূর্তির সাথে তুলনা করে এবং সুকৌশলে জাতির পিতার প্রতি অবমাননা প্রদর্শন করে রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার জন্য গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। জাতি এ ধরনের ষড়যন্ত্র অতীতে মেনে নেয়নি, ভবিষ্যতেও নেবে না।
ভাস্কর্যের বিরোধিতাকারীদের শাস্তি দাবি করে এতে আরো বলা হয়, আমরা দেশ-বিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকার জন্য দেশপ্রেমিক নাগরিকদের প্রতি অনুরোধ জানাই। আমরা উগ্র ধর্মান্ধ মৌলবাদী চক্রের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছি। একই সাথে জাতির পিতার অবমাননাকারীদের রাষ্ট্রের প্রচলিত আইনের আওতায় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।