বার্তা ৭১ ডটকমঃ ভারতে থেকে যথাসময়ে ভ্যাকসিন পাবে বাংলাদেশ, ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই বিষয়টি বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন।
সেরাম ইনস্টিটিউট টিকা রপ্তানি করতে পারবে না এমন খবরে বাংলাদেশে উদ্বেগ তৈরি হবার পর দেশটি ঢাকায় দিল্লির হাইকমিশন এবং দিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাথে সকাল থেকেই যোগাযোগ করছিল।
দুপুরে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল মান্নান এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, টিকার ব্যাপারে ভারতের সাথে বাংলাদেশের যেহেতু জিটুজি (সরকারের সাথে সরকারের) চুক্তি হয়েছে সেহেতু বাংলাদেশের যথাসময়ে টিকা পেতে কোনো সমস্যা হবে না। আমার এইমাত্র ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনারের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি আমাকে জানিয়েছেন, আমরা যে চুক্তি করেছি, সেখানে আর্থিক লেনদেন হয়েছে দুই সরকারের মধ্যে। ভারত যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সেটা তাদের বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে, আমাদের ব্যাপারে না। হাইকমিশন থেকে এটা পরিষ্কার করে দিয়েছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ আগামী মাসের শুরুতে যে ৫০ লাখ ডোজ টিকা পাবে বলে আশা করা হচ্ছে সেটি সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকেই পাওয়ার কথা। প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ হিসেবে পুরো তিন কোটি টিকার জন্য অগ্রিম হিসেবে ৬শ কোটি টাকা সেরামের অ্যাকাউন্টে রবিবার জমাও দেয়ার কথা জানিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আদার পুনাওয়াল্লার বরাত দিয়ে একাধিক আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এবং ভারত ও বাংলাদেশের স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, তারা এই মুহূর্তে টিকা রফতানি করতে পারছে না।
জরুরিভাবে ব্যবহারের জন্য রবিবার অক্সফোর্ডের টিকার অনুমোদন দেয় ভারত। তবে আপাতত এই টিকা রপ্তানি করা যাবে না- এমন শর্তেই এই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অক্সফোর্ডের টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের প্রধান।
বার্তা সংস্থা এপিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সেরাম ইনস্টিটিউটের সিইও আদার পুনাওয়াল্লা বলেন, ভারতীয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা রবিবার ভ্যাকসিনটি জরুরি ভিত্তিতে ব্যবহারের অনুমোদন দেয়। তবে এক্ষেত্রে তারা শর্ত দিয়েছে যে, সেরাম ইনস্টিটিউট আপাতত এই ভ্যাকসিন রফতানি করতে পারবে না।
তিনি জানান, এমনকি সরকার ছাড়া স্থানীয় বাজারেও এই টিকা সেরাম ইনস্টিটিউট বিক্রি করতে পারবে না বলেও শর্ত দিয়েছে ভারতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। করোনার ঝুঁকিতে থাকা ভারতীয়দের সুরক্ষিত রাখতেই দেশটি এমন পদক্ষেপ নিয়েছে বলে উল্লেখ করে পুনাওয়াল্লা।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় এবং ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি অ্যাস্টাজেনেকার উদ্ভাবিত করোনার ভ্যাকসিন উৎপাদন করছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ভ্যাকসিন উৎপাদক ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট। এরই মধ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলো অক্সফোর্ডের এই টিকার ১০০ কোটি ডোজ কিনতে সেরাম ইনস্টিটিউটের সঙ্গে চুক্তি করেছে।