বরিশাল : বিরোধীদলের নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আগমন উপলক্ষে অপরূপ সাজে সজ্জিত বরিশাল মহানগরী। পাশাপাশি মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়েছে এখন বরিশাল। বিভিন্ন জেলা উপজেলা ইউনিয়ন, ওয়ার্ড থেকে নেতা কর্মীর মিছিলের জেয়ার চলছে। নগরীসহ জেলার সকল উপজেলায়ই যেন এখন সাজ সাজ রব। বিশেষ করে বিএনপি’র নেতৃবৃন্দের ব্যানার, ফেস্টুন ও পোষ্টারে ছেয়ে গেছে বরিশাল অঞ্চল। নির্মাণ করা হয়েছে তোড়ন। এখানকার নেতা-কর্মীরা উজ্জিবিত হয়ে নেত্রীর আগমন সফল কাজ করে যচ্ছেন জোরেশারে। অর্থাৎ চেয়ারপারসনের আগমন সফলে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে দক্ষিণাঞ্চল বিএনপি।
অপরদিকে, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনও বিরোধীদলীয় নেতার আগমনের রুটসমূহে সংস্কার কাজ করে চলছে। পাশাপাশি বিরোধীদলের নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সমাবেশ সফল করতে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন মহানগর আ’লীগের আহবায়ক সিটি মেয়র শওকত হোসেন হিরন। বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এমপি এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ার জানান, সমাবেশে বর্তমান আওয়ামী সরকারের সকল ক্ষেত্রে ব্যর্থতার চিত্র ফুটিয়ে তুলবেন দলের চেয়ারপারসন। এছাড়া দেশনেত্রী ফুটিয়ে তুলবেন অবহেলিত বরিশাল অঞ্চলে আওয়ামী সরকারের আমলে কোন উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। বরং বড় বড় উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড মুখ থুবরে পড়ে আছে। সেখানে আওয়ামী সরকারের কোন নজর নেই। এমপি সরোয়ার জানান, আগামী আন্দোলন সংগ্রামে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা থাকবে ম্যাডামের বক্তব্যে। তিনি আরো জানান, বরিশালে খালেদা জিয়ার জনসভা হবে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় জনসভা। এই জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করতে ১৮ দলের নেতৃবৃন্দ ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাড.নজরুল ইসলাম খান রাজন জানান, বরিশাল ‘বেলস্ পাকর্’ স্মরণ কালের সর্ব বৃহৎ জনসমুদ্রে রূপান্তরিত হবে। জনসমাবেশে ৫ লাখের অধিক লোকের সমাগম ঘটবে মন্তব্য করেন রাজন। তিনি আরো জানান, জনসভার মধ্য দিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দক্ষিনাঞ্চলবাসীকে দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গণ আন্দোলনের নতুন ডাক দিতে পারেন। বরিশাল কোতোয়ালী বিএনপির সভাপতি এ্যাড.কাজী এনায়েত হোসেন বাচ্চু জানান, কোতোয়ালী বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার আগমন সফলে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। কর্মীদের মাঝে বিরাজ করছে আনন্দঘন পরিবেশ। তিনি জানান, কোতোয়ালী বিএনপির ১০ ইউনিয়নের নেতা-কর্মীরা দলের কর্মকান্ড কিংবা কর্মসূচী পালনে সক্রিয়। বিভেদ বিভাজনের বাইরে সকলেই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছে।
ওদিকে, দীর্ঘদিন পর দক্ষিনাঞ্চলে বেগম জিয়ার আগমনকে ঘিরে তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীদের মাঝে উৎসবের আমেজ পরিলক্ষিত হচ্ছে। বিভিন্ন ওয়ার্ড, ইউনিট, ইউনিয়ন, থানা, উপজেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি সভা, প্রচার সভা, আনন্দ মিছিল অনুষ্ঠিত হচ্ছে। জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল, যুবদল, ছাত্রদল, মহিলা দল, শ্রমিক দল, জাসাস সহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন প্রস্তুতিমূলক সভা করে সমাবেশকে সফল করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহন করছেন। ইতোমধ্যে বরিশাল জেলা ও মহানগর বিএনপির কার্যালয়ে বিভাগীয় প্রস্তুতি সভা সম্পন্ন হয়েছে। বৃহস্পতিবার দলীয় কার্যালয়ে ১৮ দলের উদ্যোগে নেত্রীর আগমন উপলক্ষে সংবাদ সন্মেলন করা হয়েছে। বরিশাল, ভোলা, ঝালকাঠী, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী জেলার ১৮ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ সমাবেশকে সফল করার জন্য জেলায় জেলায় প্রস্তুতি সভা করছে। নগরজুড়ে বিভিন্ন স্থানে শ’ শ’ গেট নির্মাণের জন্য বিভিন্ন সংগঠন কাজ করছেন কর্মীরা। এদিকে, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বরিশাল আগমনে তিনি যেসব রুট ব্যবহার করবেন সেসব রুটসমূহে সংস্কার করার বিশেষ উদ্যোগ নেন মেয়র শওকত হোসেন হিরন। এর ফলে ওইসব রুটে সংস্কার কাজ দ্রুত গতিতে চলছে। চেয়ারপারসন নগরীর প্রবেশদ্বার গড়িয়ার পাড় থেকে নথুলবাদ কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল হয়ে বিএম কলেজ রুট ব্যবহার করবেন। এরপর জেলখানার মোর হয়ে সদর রোড ব্যবহার করে বরিশাল সার্কিট হাউজে অবস্থান করবে দলের চেয়ারপারসন। সার্কিট হাউজ থেকে রাজা বাহাদুর সড়ক হয়ে জনসমাবেশস্থল বরিশাল বেলস পার্কে (বঙ্গবন্ধু উদ্যান) যাবেন বেগম জিয়া। আর এসব রুটগুলোর সংস্কার করছে বিসিসি। বিসিসির কাউন্সিলর ও পানি ও বিদ্যুত সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান আকতারুজ্জমান গাজী হিরু বলেন, সিটি মেয়রের নির্দেশে বিরোধী দলের নেতার বরিশাল আগমনের রুটে খানা খন্দকসহ অন্যান্য সংস্কার কাজ দ্রুতভাবে চলছে। প্রসঙ্গত: অতিসম্প্রতি বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের নেতৃত্বে গুলশান চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এক বৈঠকে ১৯ নভেম্বর সোমবার বিকেল ৩ টায় বরিশালের বেলস পার্কে জনসমাবেশ চুড়ান্ত হয়েছে। অবশ্য ১৮ নভেম্বর রাতে বরিশাল সার্কিট হাউজে অবস্থান করবেন বিরোধী দলের নেতা।