স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা সবাই কমবেশি চিন্তিত থাকি। সুস্বাস্থ্য আমাদের সবারই কাম্য। তাই খাবার নিয়ে আমাদের সচেতন থাকতে হয়। স্থূলতা থেকে রক্ষা পেতে অনেককেই করতে হয় ডায়েট। ওজন কমানোর জন্য বেশিরভাগ মানুষই নিয়মিত ডায়েট করে থাকেন। কিন্তু কেউ কেউ অধিক সচেতনতার ফলে একটু বেশিই ডায়েট করে ফেলেন। খাওয়া-দাওয়া একটু বেশি পরিমাণেই কমিয়ে দেন। ফলে নানারকম শারীরিক সমস্যায় পড়তে হয়। এগুলো হয় মূলত ভুল ডায়েট করার জন্য। ডায়েটের ক্ষেত্রে হরহামেশাই এই ১০টি ভুল আমরা করে থাকি।
পরিমাণমত না খাওয়া: ওজন কমানোর জন্য আপনাকে কম ক্যালরি গ্রহণ করতে হবে কিন্তু খেয়াল রাখবেন তা যাতে বেশি কম না হয়ে যায়। শরীর তার পর্যাপ্ত ক্যালরি না পেলে শক্তির জন্য তা আপনার পেশিকলা ক্ষয় করে ক্যালরি সঞ্চয় করবে। তাই প্রয়োজনীয় পরিমাণ খাবার গ্রহণের ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। চেষ্টা করুন প্রতি ৩-৪ ঘণ্টা পরপর অল্প অল্প করে খেতে। এটা আপনার একবারে বেশি খাওয়া থেকে রক্ষা করবে।
চা বা কফি না খাওয়া: চা এবং কফি আপনার কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে সতেজ রাখে যা আপনার মেটাবোলিজম ৫ থেকে ৮ শতাংশ বাড়িয়ে দেয়, দিনে ৯৮ থেকে ১৭৪ ক্যালরি ক্ষয় করতে পারে। এক কাপ গরম চা মেটাবোলিজম বাড়াতে পারে ১২%।
আঁশজাতীয় খাবার না খাওয়া: প্রচুর পরিমাণে গমের রুটি, পাস্তা আর সবজি ও ফল খেলে আঁশ পাওয়া যায় যা গবেষকদের মতে ৩০ শতাংশ ক্যালরি ক্ষয় করতে পারে। গবেষণা বলছে, যেসব মহিলা আঁশ জাতীয় খাবার বেশি খান তাদের দৈনিক ওজন বৃদ্ধির হার সবচেয়ে কম।
কক্ষ তাপমাত্রার পানি খাওয়া: আমরা পানি সাধারণত কক্ষ তাপমাত্রায় খেয়ে থাকি। তবে জার্মান একটি গবেষণা বলছে ৬ কাপ ঠাণ্ডা পানি খেলে আপনার ৫০ ক্যালরি পর্যন্ত ক্ষয় হতে পারে। এতে বছরে ৫ পাউন্ড ওজন কমতে পারে। ঠাণ্ডা পানি শরীর থেকে তাপমাত্রা গ্রহণ করায় ক্যালরি খরচ হয়।
জীবাণুমুক্ত খাবার: জীবাণুমুক্ত খাবারের অংশ হিসেবে অনেকেই হিমায়িত খাদ্য খেয়ে থাকেন। কিন্তু গবেষণা বলছে, তাজা খাবার আপনার ডায়েটের জন্য বেশি উপকারী। বিভিন্ন ফলমূল এবং শাকসবজি আপনি যত তাজা খাবেন তত আপনার ক্যালরি ক্ষয়ে সাহায্য করবে।
খাবারে প্রোটিন কম থাকা: খাবারে যাতে পর্যাপ্ত প্রোটিন থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আপনার পেশীকে সঠিক আকারে রাখতে প্রোটিন অপরিহার্য। গবেষকরা জানান, পর্যাপ্ত প্রোটিন আপনার ৩৫% পর্যন্ত ক্যালরি ক্ষয় করতে পারে।
লৌহসমৃদ্ধ খাবার না খাওয়া: আয়রন বা লৌহখনিজ আমাদের দেহের অক্সিজেন বহন করে চর্বি কমাতে সাহায্য করে। নারীদের দেহ থেকে প্রাকৃতিকভাবেই প্রতিমাসে প্রচুর আয়রন নির্গত হয়। তাই তাদের লৌহসমৃদ্ধ খাবারের প্রতি বেশি নজর দেয়া উচিত। মাংস, শিম, শস্যজাতীয় খাবার আর পালংশাকে প্রচুর আয়রন থাকে।
ভিটামিন ডি না পাওয়া: মেটাবোলিজমকে কার্যকর রাখতে ভিটামিন ডি খুবই প্রয়োজনীয়। দৈনিক ৩.৫ আউন্স স্যামন মাছ আপনার ৯০% ভিটামিন ডি সরবরাহ করবে। এছাড়া টুনামাছ, চিংড়ি, ডিম আর দুধ থেকেও ভিটামিন ডি পাওয়া যায়।
অ্যালকোহল গ্রহণ করা: অ্যালকোহল আপনার শরীরের চর্বি পোড়াতে বাধা দেয়। দিনে অত্যধিক অ্যালকোহল আপনার ৭৩ শতাংশ পর্যন্ত ক্যালরি ক্ষয় হতে দেয়না।
দুধজাতীয় খাবার থেকে দূরে থাকা: ক্যালসিয়ামের অভাব অনেক নারীর শরীরেই মেটাবোলিজমের হার কমিয়ে দেয়। দুগ্ধজাতীয় খাবার যেমন সর ছাড়া দুধ আর ফ্যাটবিহীন দই আপনার দেহে যথেষ্ট ক্যালসিয়ামের যোগান দেবে। দেহের চর্বি কমাতেও সাহায্য করবে এটি।