বার্তা৭১ ডটকমঃ আদালত পাবলিক পারসেপশনের দিকে তাকায় না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। বুধবার সকালে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জামিন স্থগিত আবেদনের শুনানির সময় তিনি এ মন্তব্য করেন।
শুনানির শুরুতেই দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, হাইকোর্ট চারটি কারণ দেখিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে জামিন দিয়েছেন। আমরা এখনও সেই আদেশের সার্টিফায়েড কপি পাইনি। আদেশের কপি পেলে লিভ টু আপিল করব।
এ সময় প্রধান বিচারপতি বলেন, সিপি ফাইল করে আসেন। তখন দুদকের আইনজীবী বলেন, সিপি ফাইল করতে রবিবার-সোমবার পর্যন্ত আমাদের সময় দেওয়া হোক। এ পর্যন্ত জামিন স্থগিত রাখা হোক। এরপর আদালত বলেন, ঠিক আছে সিপি ফাইল করে আসেন রবিবারের মধ্যে। এ পর্যন্ত জামিন স্থগিত থাকবে।
তখন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, আমাদের আগে শুনেন। আমাদের বক্তব্য তো শুনেন নাই। আমাদের না শুনে এভাবে আদেশ দিতে পারেন না।
তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, শুনতে হবে না। রবিবার পর্যন্ত তো স্থগিত দিয়েছি। ওই দিন আসেন তখন শুনবো।
অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেন, আপনি যে এক তরফাভাবে শুনানি করে আদেশ দিলেন, এতে আদালতের প্রতি পাবলিক পারসেপশন খারাপ হবে। জবাবে প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা পাবলিক পারসেপশনের দিকে তাকাই না। কোর্টকে কোর্টের মত চলতে দিন।
এরপর জয়নুল আবেদীন ও এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, না শুনেই তো আদেশ দিলেন। আদালত বলেন, আমরা অন্তবর্তীকালীন আদেশ দিয়েছি। আমাদের শোনার দরকার নেই।
জয়নুল আবেদীন বলেন, এই মামলায় চেম্বার আদালত তো স্থগিত দেয়নি। এই সময়ের মধ্যে আসামিও বের হবে না। তাই স্থগিতের প্রয়োজন নেই। এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, আমরা তো শুনানির সুযোগ পেলাম না।
এরপরই কার্যতালিকা থেকে অন্য মামলার শুনানি শুরু হয়।
শুনানির এক পর্যায়ে খালেদা জিয়ার পক্ষে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি গিয়াস উদ্দিন আহমদ দাঁড়িয়ে আদালতকে বলেন, আপনি তো না শুনেই এক তরফা আদেশ দিলেন। আমাদের কথা শুনতে হবে। কেন শুনবেন না।
তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, কার কথা শুনবো, কার কথা শুনবো না তা কি আপনার কাছে শুনতে হবে। গিয়াস উদ্দিন আবারো একটু উত্তেজিত হয়ে একই কথা বললে প্রধান বিচারপতি বলেন, আপনি কি আদালতকে থ্রেট (হুমকি) করছেন?
গিয়াস উদ্দিন বলেন, শুনে তারপর আদেশ দিতে হবে। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, থ্রেট দিবেন না।
এক পর্যায়ে অ্যাটর্নি জেনারেলকে উদ্দেশ করে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, আপনি তো কোর্টকে শেষ করে দিলেন। তখন অ্যাটর্নি জেনারেল কোনো উত্তর না দিয়ে চুপ করে দাঁড়িয়েই ছিলেন। একদল আইনজীবী তখন দালাল দালাল বলে আদালত কক্ষ ত্যাগ করেন।