ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে টানা এই তিনটি শিরোপা জিতলো স্পেন। রোববার ইউরো ২০১২ এর ফাইনালে ইতালিকে ৪-০ গোলে হারিয়ে অবিশ্বাস্য এই রেকর্ড গড়েছে ভিসেন্তে দেল বস্কর দল।
ইউরোপের ফুটবলের সবচেয়ে বড় আসর ইউরোতে এর আগে আর কোনো দল শিরোপা ধরে রাখার কৃতিত্ব দেখাতে পারেনি।
কিয়েভের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে শুরুতে মাঝমাঠ দখলে রেখে আক্রমণে উঠতে থাকে দু দল। যদিও বলের দখল ও আক্রমণে মাঠে আধিপত্য বিস্তার করেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরাই।
তবে গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি ইউরোপ ও বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের। ১৪ মিনিটে ইতালির রক্ষণ-চক্র ভেঙ্গে ফেলেন আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা। চমৎকার পাসে বল দেন আগুয়ান সেস ফ্যাব্রেগাসকে।
স্পেনের ‘ফলস নাইন’ বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিপদজনকভাবে এগিয়ে যান ইতালির গোলপোস্টের দিতে। ‘আজ্জুরি’ রক্ষণের সমস্ত মনযোগ তখন তার দিকে। ডান সাইডবার ঘেঁষে অরক্ষিত ডেভিড সিলভাকে উদ্দেশ্য করে ফ্যাব্রেগাসের চমৎকার ক্রস, দুর্দান্ত হেডে লক্ষ্যভেদ করে কোচের আস্থার জবাব দেন সিলভা।
দু দলই আক্রমণে উঠতে থাকে। স্পেনের রক্ষণে ভীতি ছড়াতে থাকেন মারিও বালোতেল্লি-আন্তোনিও কাসানো জুটি।
প্রথমার্ধের শেষ দিকে গোলের জন্য মরিয়া ইতালি কিছুটা উপরে এসে খেলতে শুরু করে। ৪১ মিনিটে এর খেসারতও দিতে হয় তাদের। স্পেন গোলরক্ষক ইকার ক্যাসিয়াসের লম্বা পাসের বল মাঝমাঠে পেয়ে যান জর্ডি আলবা। জাভির সঙ্গে বল দেয়া নেয়া করে দ্রুত গতিতে প্রতিপক্ষ রক্ষণে ঢুকে পড়েন তিনি। ইতালির রক্ষণ সেনারা তখনও কিছু বুঝে উঠতে পারেনি। বক্সের মধ্যে বলের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে জিয়ানলুইজি বুফনকে বোকা বানিয়ে দলকে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে নেন আলবা।
দ্বিতীয়ার্ধের প্রথম ১০ মিনিটে দু দলই একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে। এর মধ্যে কয়েকটি আক্রমণতো ছিলো দুর্দান্ত। ৪৮ মিনিটে ফ্যাব্রেগাসের একটি প্রচেষ্টা দরুণ দক্ষতায় রুখে দেন ইতালির ডিফেন্ডার বালজারাতি। দুই মিনিট পর ডি নাতালির একটি শট কোনোরকমে রুখে দেন ক্যাসিয়াস।
ধীরে ধীরে খেলা আবার নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নেয় স্পেন। তাদের একের পর এক আক্রমণে দিশেহারা হয়ে ওঠে ইতালি।
৭৫ মিনিটে সেস ফ্যাব্রেগাসের বদলি হিসেবে মাঠে নামেন ফার্নান্দো তোরেস। নেমেই নিজের ঝলক দেখাতে শুরু করেন সুযোগ সন্ধানী এই স্ট্রাইকার।
৮৪ মিনিটে ডি রোসির ভুলে বল পেয়ে যান জাভি। নিঁখুত পাসে বল দেন তোরেসকে। নিজের গতি দিয়ে ইতালির রক্ষণকে পরাস্ত করে অসহায় বুফনের সামনে দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। ৩-০ গোলে এগিয়ে গিয়ে স্পেনের জয় তখন অনেকটাই নিশ্চিত।
এরপর হঠাৎ করে যেন খেলাই ভুলে যায় ইতালি। ৮৭ মিনিটে ইনিয়েস্তার বদলি হিসেবে মাঠে নামার মাত্র এক মিনিটের মাথায় গোল করে স্পেনকে ৪-০ ব্যবধানে এগিয়ে নেন হুয়ান মাতা। গোলটির রূপকার তোরেস।
শিরোপা তুলে ধরা স্পেনের জন্য তখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।