ঢাকা, ১৫ মে: একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগের মামলায় আটক বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রথম সাক্ষী শিক্ষাবিদ ড. আনিসুজ্জামানকে ‘মিথ্যাবাদী’ ও ‘রিফিউজি’ বলায় তার আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে কেন ব্যবস্থা নেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে ‘কারণ দর্শাও’ নোটিশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল
মঙ্গলবার সকালে প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মালুম বিষয়টি ট্রাইব্যুনাল-১’র নজরে আনলে বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ রুল জারি করেন।
আগামী ২৭ মে’র মধ্যে সালাউদ্দিন কাদেরের আইনজীবীকে আদালতে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। জবাব দিতে ব্যর্থ হলে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হবে বলেও আদালত রুলে উল্লেখ করেন।
এর আগে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর জেয়াদ আল মামুন বিষয়টি ট্রাইব্যুনালের নজরে এনে বলেন, “ড. আনিসুজ্জামান দেশের একজন গুণীজন। দেশ-বিদেশে তার বিপুল সুনাম রয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে তার বিশাল অবদান রয়েছে। তাকে কটাক্ষ করে কথা বলায় তার সুনাম ক্ষুণ্ন হয়েছে। সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা তার ছাত্ররা এতে আহত হয়েছেন।”
বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলায় প্রথম সাক্ষী হিসেবে সোমবার আদালতে জবানবন্দি উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। তিনি বলেন, “একাত্তরে সালাউদ্দিন কাদেরের সহযোগিতায় চট্টগ্রামে রাউজানে হত্যা-নির্যাতন চালায় পাকিস্তানি বাহিনী।”
সোমবার তার সাক্ষ্য শেষে জেরা শুরুর পর্যায়ে আসামির আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল বলেন, আনিসুজ্জামান ‘কতো বড় মিথ্যুক’ তা তিনি দেখিয়ে দেবেন। তাকে পাকিস্তানি রিফিউজি বলেও কটাক্ষ করেন।
এতে আপত্তি জানিয়ে বিচারপতি নিজামুল হক বলেন, আনিসুজ্জামান একজন সম্মানিত ব্যক্তি। জেরার সময় তার কোনো বক্তব্য মিথ্যা মনে হলে আইনজীবী তা ধরতে পারেন। কিন্তু এভাবে সরাসরি তাকে মিথ্যুক আখ্যা দেয়া চলবে না।
আদালতের ওই নির্দেশনার পরও বাইরে বেরিয়ে সাংবাদিকদের কাছে একই ধরনের বক্তব্য দেন ব্যারিস্টাটার ফখরুল।