ঢাকা, ১৭ মে: বিরোধীদলের প্রতি আহবান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “ধ্বংসাত্মক পথ পরিহার করে গণতন্ত্রের পথে ফিরে আসুন। সহ্য করছি বলে মনে করবেন না এটা আমাদের দুর্বলতা।”
বৃহস্পতিবার বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্র প্রাঙ্গণে ছাত্রলীগ আয়োজিত সংবর্ধনায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনার ৩১ তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ও সমুদ্র বিজয় উপলক্ষে এই ছাত্রসংবর্ধনার আয়োজন করে ছাত্রলীগ। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগ।
হাসিনা বলেন, “আমরা জানি যারা হরতাল করে জনজীবনে নিরাপত্তা বিঘ্নিত করে তাদের কিভাবে সঠিক পথে আনতে হয়। কিন্তু আমরা তা করতে চাই না। আমরা চাই তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে।”
বিরোধী দলের ডাকা হরতালের কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ নেই উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘তারা কি কারণে হরতাল দিয়েছে। তাদের এই হরতালের সুর্নিদিষ্ট কোনো কারণ নেই।’’
তিনি প্রশ্ন করে বলেন, ‘‘তারা কার স্বার্থে পাঁচ পাঁচটি জীবন নিয়েছে? সেই নিহতদের পরিবারের কথা একটিবারও কি তারা ভাবে না?’’
গণতন্ত্রের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘ধারাবাহিক গণতন্ত্র ছাড়া কোনো দেশ উন্নতি করতে পারে না।’’
পৃথিবীর আর দশটা গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় বাংলাদেশেও সেভাবে নির্বাচন হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘বাংলার মানুষ তত্ত্বাবধায়করূপী ওই দানবকে আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না।’’
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, ব্যবসায়ীসহ কোনো শ্রেণ-পেশার মানুষ বাদ ছিল না যাদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতন করা হয়নি।’’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘২০১৩ সালের অক্টোবরের ২৫ তারিখের মধ্যে নির্বাচনের ঘোষণা দিতে হবে। এবং জানুয়ারি ২০১৪ এর মধ্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে।’’
প্রধানমন্ত্রী বাংলার জনগণের প্রতি আহবান জানিয়ে বলেন, ‘‘২০০৮ এর নির্বাচনে আপনারা আমাদের ভোট দিয়ে জয়ী করেছিলেন বলে আমরা সমুদ্রবিজয় করতে পেরেছি। ২০১৪ এর নির্বাচনেও আপনারা যদি আমাদের ভোট দিয়ে জয়ী করেন তাহলে ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমার বিরোধেও আমরা জয়ী হবো ইনশাল্লাহ।’’
দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার জন্য শিক্ষিত জাতি গঠন জরুরি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘ছাত্রলীগকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে আগামী দিনের নেতৃত্ব হিসেবে গড়ে উঠতে হবে।’’
আওয়ামী লীগ সভানেত্রী এ সময় উন্নত জাতি গঠনে ছাত্রলীগসহ দেশের মানুষের প্রতি শিক্ষা, খেলাধূলা এবং সংস্কৃতিচর্চার ওপর গুরুত্ব দিতে বলেন।
সবুজে-সুনীলে সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘বাংলাদেশকে একটি ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত দেশ হিসেবে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলবো এটাই আমাদের লক্ষ্য।’’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘‘বাংলাদেশের মানুষের জন্য আমি আমার জীবন উৎসর্গ করে দিতে চাই। প্রয়োজনে আমার বাবার মতো বুকের রক্ত দিতেও প্রস্তুত। বাংলার জনগণের জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত।’’
ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলমের পরিচালনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনাকে সমুদ্রবিজয় উপলক্ষে ক্রেস্ট প্রদান করেন সোহাগ ও নাজমুল।
ছাত্রলীগ সভাপতি এইচ এম বদিউজ্জামান সোহাগের সভাপতিত্বে এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সারাদেশের সব জেলার ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।