এতদিন ধরে কঠোর গোপনীয়তার সঙ্গে রক্ষিত মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগের নানা কেলেঙ্কারির তথ্য অত্যন্ত নীরবে প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রিডম অব ইনফরমেশন অ্যাক্টের আওতায় এসব গোপন তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে বলে এপি এক রিপোর্টে জানিয়েছে। ২০০৪ সাল থেকে চলে আসা গোয়েন্দা বিভাগের নানা কেলেঙ্কারির মধ্যে রয়েছে পতিতাদের সঙ্গে গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের ঘনিষ্ঠতা, স্পর্শকাতর তথ্য ফাঁস, পর্নো ছবি প্রকাশ, যৌন হয়রানি, অনৈতিকভাবে ফোনে আড়িপাতা, আগ্নেয়াস্ত্রের যথেচ্ছা ব্যবহার এবং মদ্যপ অবস্থায় অসদাচরণসহ আরও অনেক কিছু। তবে এসব অভিযোগের ঠিক কতটা সত্য বলে প্রমাণিত হয়েছে সেটা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। গত এপ্রিল মাসে কলম্বিয়াতে মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তাদের পতিতা কেলেঙ্কারির ঘটনা প্রকাশের পর ইউএস ফ্রিডম অব ইনফরমেশন অ্যাক্টের আওতায় কর্তৃপক্ষ অনেকটা নীরবেই এসোসিয়েটেড প্রেসসহ অন্যান্য সংবাদ সংস্থার কাছে ২২৯ পৃষ্ঠার কঠোরভাবে সংরক্ষিত কেলেঙ্কারির ঘটনা প্রকাশ করেছে। এসব নথিতে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের মহাপরিদর্শকের কাছে দায়ের করা অভিযোগসমূহও তুলে ধরা হয়েছে। গত মাসে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে এমন বেশ কিছু ঘটনাও এতে রয়েছে বলে এপি উল্লেখ করেছে। সরকারের পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়েছে, এসব অভিযোগের অনেকগুলোই প্রশাসনিকভাবে সমাধান করা হয়েছে। অন্য অভিযোগগুলোর ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্ত করা হচ্ছে। গোয়েন্দা বিভাগের কর্মকর্তারা পতিতাদের সঙ্গে যৌন কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ার পর কংগ্রেসের পক্ষ থেকে যে উদ্বেগ জানানো হয়েছিল এসব তথ্য প্রকাশ তার ফলাফল বলে ধারণা করা হচ্ছে। গোয়েন্দা বিভাগের পরিচালক মার্ক সুলাইভান গত মে মাসে এক শুনানির সময় কলম্বিয়ার ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে উল্লেখ করে সে জন্য ক্ষমা চেয়েছিলেন। তবে এবারের এ গোপন কেলেঙ্কারির বিষয়গুলো প্রকাশিত হওয়ার পর এ ব্যাপারে গোয়েন্দা বিভাগের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোন প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। ২০১১ সালের আগস্টে দায়ের করা একটি যৌন হয়রানির ঘটনাও এতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। চরম গোপনীয়তার সঙ্গে রক্ষিত ওই ঘটনায় গোয়েন্দা বিভাগের এক কর্মীর বিরুদ্ধে তারই এক নারী সহকর্মীকে অসৎ উদ্দেশ্যে বিছানায় ফেলে দেয়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল। ওই নারী সহকর্মী বেশ কয়েকবার আপত্তি করা সত্ত্বেও পুরুষ সহকর্মী তাকে জোর করেছিল। অভিযোগপত্রে অভিযুক্ত কর্মচারীকে একজন সচেতন এবং নির্ভরযোগ্য কর্মচারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে অভিযুক্তকে প্রশাসনিভাবে অবনতি দিয়ে এ ঘটনার তদন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল।