বার্তা ৭১ ডট কম:অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে না পারলে উদ্দেশ্য ব্যাহত হবে। ঐক্যের মাধ্যমে করলে সবার মনে সাহস আসবে। সবাই ভাববে আমরা এখনও জেগে আছি। আমরা ভোঁতা হয়ে যায়নি। আমরা জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ আছি। আমি যতদিন আছি, একতা নিয়েই থাকব। কাজেই সেই পথেই আমাদের চলতে হবে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) জুলাই ঘোষণাপত্র তৈরির লক্ষ্যে রাজধানীর বেইলি রোডে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সর্বদলীয় ঐক্যের বৈঠকে সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
এসময় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ৫ জুলাইয়ের পুরো অনুভূতিটাই ছিল একতার অনুভূতি। একতাতেই আমাদের জন্ম, একতাই আমাদের শক্তি। ঐক্যের মাঝে এ সরকারের জন্ম হয়েছে।
তিনি বলেন, যখন নিজেরা নিজেরা কাজ করি, তখন একটু দুর্বল মনে করি। আবার যখন সবাই একসঙ্গে কাজ করি তখন মনের মধ্যে সাহস বাড়ে, একতাবদ্ধভাবে আছি। আপনাদের সঙ্গে দেখা হলে, বসতে পারলে খুব ভালো লাগে, মনে সাহস পাই।
ঘোষণাপত্রের বিষয়ে ড. ইউনূস বলেন, ছাত্ররা একদিন এসে বলল তারা একটা ঘোষণাপত্র দেবে। আমাকেও সেখানে থাকতে হবে। আমি বললাম এটা হবে না। আমার ও তোমাদের চাওয়াটা হবে না। সবাইকে নিয়েই করতে হবে। না করলে এটা ঠিক হবে না। যে একতা দিয়ে তোমরা ৫ আগস্ট সৃষ্টি করেছিলে সেটার অবমাননা হবে। সেই কথা থেকে এ আলাপ শুরু। আজকে আলোচনা একে কেন্দ্র করেই হবে।
তিনি আরও বলেন, ঐক্যবদ্ধভাবে করতে না পারলে উদ্দেশ্যে ব্যাহত হবে। ঐক্যের মাধ্যমে করলে সবার মনে সাহস আসবে। সবাই ভাববে আমরা এখনও জেগে আছি। আমরা ভোঁতা হয়ে যায়নি। আমরা জাতি হিসেবে ঐক্যবদ্ধ আছি। আমি যতদিন আছি, একতা নিয়েই থাকব। কাজেই সেই পথেই আমাদের চলতে হবে।
এর আগে, এদিন বিকেল ৪টার পর ড. ইউনূসের সভাপতিত্বে সর্বদলীয় বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, গণতন্ত্র মঞ্চ, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন।
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সর্বদলীয় বৈঠকে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-(এলডিপি) এবং বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি গত ৩১ ডিসেম্বর ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশ করতে চেয়েছিল। তখন এনিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা আলোচনা তৈরি হয়। পরে ৩০ ডিসেম্বর রাতে জরুরি প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
এরপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে জুলাই ঘোষণাপত্র প্রকাশের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাইয়ের ঘোষণাপত্রের ওপর একটি সর্বদলীয় বৈঠক আয়োজন করবে।