ঢাকা, ১৯ জুলাই: বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচনে বিরোধীদল সমর্থক জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের চারজন এবং সরকার সমর্থক আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের তিনজন প্রাপ্ত ভোটের ফলাফলে এগিয়ে আছে বলে জানা গেছে। তবে গ্রুপ আসনের সকল সদস্যপদে বিজয়ী হয়েছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের প্রার্থীরা।
এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত আওয়ামী লীগ মমতাজউদ্দিন আহম্মেদ মেহদী ও বিএনপির ব্যারিস্টার রাগিব রউফ বার্তা৭১ডটকমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বার কাউন্সিল নির্বাচনের বিষয়ে কথা বলতে চাইলে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক অ্যাডভোকেট মমতাজউদ্দিন আহম্মেদ মেহদী বলেন “আমাদের প্যানেল থেকে অ্যাডভোকেট আব্দুল মতিন খসরু, সৈয়দ রেজাউর রহমান ও ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর এগিয়ে আছেন।” তিনি বলেন, “আমাদের প্রার্থীরা এবার খারাপ করেছেন।”
অন্যদিকে ব্যারিস্টার রাগিব রউফ বলেন, “আমাদের প্যানেল থেকে সাতজনের মধ্যে অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহাবুব হোসেন, আব্দুল জামিল মোহাম্মদ আলী (এ,জে,মোহাম্মদ আলী) ব্যারিস্টার এ এম মাহাবুব উদ্দিন খোকন ও অ্যাডভোকেট সানাউল্লাহ মিয়া এগিয়ে আছেন।” তবে তারা বলেন এটা বেসরকারি ফলাফল না। ভোট গণনার পরে যারা এগিয়ে আছে তার ওপর ভিত্তি করে এটা জানা গেছে।
বিরোধীদল সমর্থক জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেলের চারজন এবং গ্রুপ আসনের সকল সদস্যপদে বিজয়ী হয়েছেন বলে জানান ব্যারিস্টার রাগিব রউফ।
আওয়ামী লীগ নেতা ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদাক অ্যাডভোকেট মমতাজউদ্দিন আহম্মেদ মেহদী ও বিএনপির ব্যারিস্টার রাগিব রউফ উভয়েই বলেন, “আগামী শনিবার পূর্ণাঙ্গ ফলাফল বের হবে।”
বার কাউন্সিলের সচিব এনায়েত ফজলুর রশিদ বলেন, “আমার কাছে এই মুহূর্তে নির্বাচনী ফলাফলের কোনো তথ্য নেই। বেসরকাররি ভাবেও আমি এই মুহূর্তে বলতে পারছি না কে এগিয়ে আছেন। সারাদেশের ভোটারদের মেটিরিয়ালস্ আসবে তার পরে বলা যাবে সঠিক তথ্য।” তবে তিনি বলেন, “আগামী রোববারে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ করা হবে।”
বুধবার বাংলাদেশ বার কাউন্সিল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ঢাকাসহ সারাদেশে ৩৮ হাজারের বেশি ভোটার সকাল দশটা থেকে বেলা পাঁচটা পর্যন্ত তাদের ভোট দিয়েছেন। সারাদেশে ৬৪ জেলা বারসহ মোট ৭৭- ৭৮টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে।
এর আগে ভোটগ্রহণের জন্য যাবতীয় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়।
এ নির্বাচনে সরকার সমর্থক আইনজীবীদের সংগঠন সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ তিনবার তাদের প্রার্থী প্যানেল বদল করে। সর্বশেষ ৭ জুলাই নতুন করে প্যানেল ঘোষণা করে। তাদের পক্ষে এবার নির্বাচনী প্রচারণা হয়েছে কম। এ প্রার্থীতা ঘোষণা করা নিয়ে তাদের মধ্যে চরম মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। মতবিরোধের কারণে বার কাউন্সিলের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান সিনিয়ির আইনজীবী আব্দুল বাসেত মজুমদারসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী তাদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেন।
নির্বাচনে সমন্বয় পরিষদ প্যানেল থেকে সাধারণ সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছিলেন-সৈয়দ রেজাউর রহমান, আব্দুল মতিন খসরু, সুব্রত চৌধুরী, মো. আব্দুল্লাহ আবু, মো. জাহেদুল বারী, মো. মাহবুব আলী ও ব্যারিস্টার তানিয়া আমীর এবং গ্রুপ আসনে খোন্দকার আব্দুল মান্নান, এইচ আর জাহিদ আনোয়ার, এ এম আনোয়ারুল কবির, শান্তিপদ ঘোষ, এম এম মুজিবুর রহমান, সিরাজ-উল ইসলাম ও মো. আব্দুল গণিকে প্রার্থী করা হয়।
অপরদিকে থেকে সাধারণ সদস্য পদে প্রার্থী হয়েছিলেন- অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, গিয়াস উদ্দিন আহম্মেদ, এ জে মোহাম্মদ আলী, নিতাই রায় চৌধুরী, মো. সানাউল্লাহ মিয়া, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও শেখ মোহাম্মদ আজাদ। এছাড়া গ্রুপ আসনের সদস্য প্রার্থীরা হলেন-গোলাম মোস্তফা খান, মোহাম্মদ আব্দুল বাকী মিয়া, মো. কবির চৌধুরী, মো. কাইমুল হক, আব্দুল মালেক, মো. ইসহাক ও এ কে এম হাফিজুর রহমান।
বার কাউন্সিলে তিন বছর মেয়াদী কার্যনির্বাহী কমিটির মোট সদস্য সংখ্যা ১৫ জন। অ্যাটর্নি জেনারেল পদাধিকার বলে বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান নিযুক্ত হন। সে হিসেবে বার কাউন্সিলের ভোটাররা মূলত ১৪ জনকে সদস্য পদে নির্বাচিত করেন। এই ১৪ জনের মধ্যে থেকে সিনিয়র সদস্যকে ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত করা হয়।
এবার বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম পদাধিকার বলে নির্বাচনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।