নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮দলীয় জোটের সমাবেশ আজ বুধবার বিকেল ২টায় জনসভার কার্যক্রম শুরু হবে। এই জনসভায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার আন্দোলনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা দেয়ার কথা রয়েছে।
ঢাকায় সমাবেশ করার জন্য বড় কোনো জায়গা না থাকায় এবং পল্টন-মানিক মিয়া এভিউনিতে সমাবেশের অনুমতি না থাকায় বিরোধী দল নয়াপল্টনের সড়কে এই সমাবেশ করতে বাধ্য হচ্ছে বলে বিএনপি থেকে জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে সমাবেশের অনুমতি পাওয়ার পর থেকেই নয়াপল্টনে জড়ো হতে থাকে জোটের শরিক দলগুলোর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে চলছে সভামঞ্চ নির্মাণের কাজ। গান গেয়ে মাতিয়ে রাখছেন জাসাসের শিল্পীরা।
৩০ ফুট প্রস্থ আর ২৪ ফুট দৈর্ঘ্য এ মঞ্চে শতাধিক নেতারা বসার সুযোগ পাবেন।
বিএনপি অফিসে শোভাপাচ্ছে নতুন একটি সাইনবোর্ড। আশপাশের ভবনগুলোতে ঝুলছে দলটির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া, বিএনপির ভবিষ্যতের কা-ারী তারেক রহমান, নিঁখোজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর ছবি সম্বলিত ব্যানার।
সমাবেশের প্রস্তুতি দেখতে মঙ্গলবার রাত ১১টায় নয়াপল্টনে আসেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখর্বল ইসলাম আলমগীর। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন যুগ্ম মহাসচিব আমান উলৱাহ আমান, বরকত উলৱাহ বলু, অ্যাডভোকেট তৈমুল আলম খন্দকার সহ দলের জেষ্ঠ্য নেতারা।
এরই মধ্যে রাজধানীর বাইরে থেকে নেতাকর্মীরা ঢাকায় পৌঁছেছে।
১০দিন পূর্বেই সমাবেশের অনুমতি চেয়ে সংশিৱষ্টদের চিঠি দিলেও সমাবেশের প্রায় ২৪ ঘন্টা আগে কর্র্তৃপৰ অনুমতি দেয়। অবশ্য বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকা বলেছিলেন, অনুমতি না পেলেও সমাবেশ হবে। তিনি বলেন, ঢাকা মহানগরীতে অনুষ্ঠিত অতীতের যে কোনো সমাবেশের এবার জনসমাগম বেশি হবে।
জনসভার অনুমতি নিয়ে এর আগেও সমস্যায় পড়তে হয়েছে বলে অভিযোগ বিএনপি নেতাদের। প্রতিবারই শেষ মুহূর্তে অনুমতি পায় তারা।
আগের মতো এবারো জনসভার অনুমতির সঙ্গে কয়েকটি শর্তও জুড়ে দিয়েছে পুলিশ।
রাতে জনসভার অনুমতিপত্র বিএনপির দফতরে পাঠায় ঢাকা মহানগর পুলিশ। তাতে ১১টি শর্তের কথা বলা হয়েছে। শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে- জনসভার নির্ধারিত সীমানা পূর্বে ফকিরেরপুল ক্রসিং থেকে পশ্চিমে বিজয় নগরের নাইটিঙ্গেল রেস্তোরা ক্রসিং পর্যন্ত, জনসভা এলাকার বাইরে মাইক স্থাপন করা যাবে না, মূল সড়কের বাইরে মঞ্চ নির্মাণ করতে হবে, মঞ্চকে রাজনৈতিক বক্তব্যের বাইরে অন্য কোনো কাজে ব্যবহার করা যাবে না, সভা শুর্বর দুই ঘণ্টার বেশি আগে লোকসমাগম করা যাবে না, বিকাল ৫টার মধ্যে জনসভা শেষ করতে হবে।
শর্তগুলোর বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখর্বল ইসলাম আলমগীর বলেন, এটা নিয়ন্ত্রিত গণতন্ত্র।
অনুমতি পাওয়ার আগে দুপুর আড়াইটায় আবদুস সালামের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল কাকরাইলে মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার আনোয়ার হোসেনের সঙ্গে বৈঠক করেন।
প্রতিনিধি দলে ছিলেন- সংসদ সদস্য শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, বিরোধীদলীয় নেতার নিরাপত্তা দলের সমন্বয়কারী অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল আবদুল মজিদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান ও মহানগর যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী আবুল বাশার।
ইন্টারনেটে সরাসরি সম্প্রচার
আগের মতো খালেদা জিয়ার এই সভাও ইন্টারনেটে দেখা যাবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি।
বার্তা ৭১ ডটকমকে তিনি বলেন, “জনসভার পুরো কার্যক্রম ইন্টারনেটে (www.bnplive.com) সরাসরি সম্প্রচার করা হবে। দুপুর ২টা থেকে এই সম্প্রচার কার্যক্রম শুরু হবে।’’