জাতিসংঘ, ৩০ নভেম্বর : ফিলিস্তিনিদের সার্বভৌম রাষ্ট্রের স্বীকৃতির দাবির প্রতি বিপুল সমর্থন জানিয়ে রায় দিয়েছে জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলো। শুক্রবার রয়টার্স অনলাইনের প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়।
বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ‘জন্ম সনদের’ এই দাবির বিষয়ে ভোটাভুটিতে প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেয় ১৩৮টি সদস্য দেশ। ১৯৩ দেশের এই সংঘের মাত্র নয়টি ফিলিস্তিনিদের দাবির বিরোধিতা করে, যার মধ্যে ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রও রয়েছে।
এই ভোটাভুটিতে ৪১টি সদস্য দেশ ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকে। ফিলিস্তিনিদের দাবির প্রতি এই বিপুল সমর্থনকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের ‘কূটনৈতিক পরাজয়’ বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
ফিলিস্তিন এতোদিন এই বিশ্ব ফোরামের অধিবেশনে যোগ দেয়ার সুযোগ পেত ‘পর্যবেক্ষক অঞ্চল’ হিসাবে। পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের মর্যাদা পাওয়ায় ফিলিস্তিনের প্রতিনিধি সাধারণ অধিবেশনের বিতর্কে অংশ নিতে পারবেন। ফিলিস্তিনের সীমানার দাবিও এক ধরনের স্বীকৃতি পাবে।
তবে ইসরাইলের জন্য এর চেয়েও ভয়ের বিষয় হলো- এই মর্যাদার পর ফিলিস্তিনিরা আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) মতো জাতিসংঘের সহযোগী সংস্থাগুলোর সদস্য হওয়ার আবেদন করতে পারবে। আর আইসিসির সদস্য হতে পারলে ফিলিস্তিনিরা ইসরাইলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগও আনতে পারবে।
এখনই জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য হতে না পারলেও ‘রাষ্ট্র’ স্বীকৃতি পাওয়ার খবরে পশ্চিম তীরের রামাল্লায় চার রঙা পতাকা হাতে উল্লাসে মেতে ওঠে দীর্ঘদিন ধরে সার্বভৌম রাষ্ট্রের মর্যাদার দাবিতে লড়াই চালিয়ে আসা ফিলিস্তিনিরা।
ঠিক এ সময়ই তাদের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস সাধারণ পরিষদে দাঁড়িয়ে বিশ্বনেতাদের উদ্দেশে বলেন, শান্তিপূর্ণ সমাধানের আশা বাঁচিয়ে রাখতে এই ভোটই ছিল বিশ্বের সামনে ‘শেষ সুযোগ’।
২০০২ সালে পূর্ণ সদস্য রাষ্ট্রের মর্যাদা পাওয়ার আগে সুইজারল্যান্ডও ‘সদস্য নয়’- এমন পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র হিসাবে জাতিসংঘে ছিল।
ভোটাভুটির পর জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন বলেন, একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পাওয়ার অধিকার ফিলিস্তিনিদের আছে। আর ইসরাইলের রয়েছে নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকার।