বার্তা৭১ ডটকমঃ যুক্তরাষ্ট্রের একদল কংগ্রেস সদস্য বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পে কাজের পরিবেশ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশী পণ্যের শুল্কমু্ক্ত রপ্তানির সুবিধা পর্যালোচনা করে দেখার আহবান জানিয়েছেন।
সিনেট এবং হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভের মোট ১২ জন সদস্য এ নিয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন ওবামা প্রশাসনের কাছে। খবর বিবিসির।
এতে তারা বেশ কিছু বাংলাদেশী পন্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকারের বিষয়টি নিয়ে চলমান একটি পর্যালোচনা দ্রুত শেষ করার জন্য তাগিদ দিয়েছেন।
কিছুদিন আগে বাংলাদেশের আশুলিয়ায় একটি পোষাক শিল্প কারখানায় আগুনে শতাধিক শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে তাঁরা বলেন, বাংলাদেশে শ্রমিকদের কাজের পরিবেশের মান ক্রমশই নিচে নামছে এবং শ্রমিকদের অধিকার সঠিক ভাবে বাস্তবায়ন হচ্ছে না বলে তারা মনে করেন। চিঠিতে তাঁরা আরও বলেন, বাংলাদেশ সরকার শ্রম বিষয়ক নানা সংস্কারের কথা বললেও কার্যত দেশটি উল্টো পথে হাঁটছে।
চিঠিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছে মার্কিন কংগ্রেসে বাংলাদেশ ককাসের অন্যতম সদস্য জোসেফ ক্রাউলি এবং রিপ্রেজেন্টেটিভ স্যান্ডি লেভিন।
বাংলাদেশ আদৌ জিএসপি সুবিধাভুক্ত দেশের তালিকায় থাকতে পারবে কি না সে বিষয়ে যে পর্যালোচনা চলছে, সেটি দ্রুত শেষ করতে হবে বলে তারা তাগিদ দেন। তবে বাংলাদেশের তৈরী পোষাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর ভাইস প্রেসিডেন্ট সিদ্দিকুর রহমান বাংলাদেশ সম্পর্কে মার্কিন কংগ্রেস সদস্যদের অবস্থানের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেছেন।
তিনি বলেন, একটা দুর্ঘটনা দেখেই যদি তারা ধারণা করেন যে,বাংলাদেশের সব শিল্প কারখানার কাজের পরিবেশ নেমে গেছে সেটা ঠিক হবে না। তাদের উচিৎ বাংলাদেশে এসে সব দেখে তারপর সিদ্ধান্ত নেয়া।
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশের পোষাক শিল্পে কোন কোন ক্ষেত্রে কাজের পরিবেশের উন্নতি দরকার, সেটা তারা যদি আমাদের বলে আমরা সেসব বাস্তবায়ন করতে প্রস্তুত।
অন্যদিকে বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রী জি এম কাদের বলেন, গার্মেন্টস শিল্পে যেন তাজরিন ফ্যাশন্সের কারখানার মতো ট্র্যাজেডির পুনরাবৃত্তি না হয়, তারা সেই চেষ্টা করছেন।
জি এম কাদের বলেন, বাংলাদেশের পোষাক শিল্প সম্পর্কে হয়তো মার্কিন আইন প্রণেতার ভালোভাবে অবহিত নন। বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্পের বিকাশ যেহেতু খুব দ্রুত ঘটেছে, এর ফলে হয়তো অনেক কারখানা সঠিক পদ্ধতিতে করা হয় নি। কিন্তু প্রতিষ্ঠিত কারখানাগুলো সব নিয়ম কানুন মেনে চলছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের পোষাক শিল্প যুক্তরাষ্ট্রে শুল্ক মুক্ত রপ্তানির সুযোগ পায় না।
তবে বাণিজ্য মন্ত্রী স্বীকার করেন যে গার্মেন্টস শিল্পের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রে কংগ্রেস সদস্যদের এই পদক্ষেপে তারা উদ্বিগ্ন। কারণ তাদের এই মনোভাব দুদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষতি করতে পারে।