স্পোর্টস ডেস্ক, ০৬ জানুয়ারি,বার্তা৭১ ডটকমঃ দিল্লিতে লো-স্কোরিং ম্যাচে সফরকারী পাকিস্তানকে ১০ রানে হারিয়েছে স্বাগতিক ভারত। প্রথম দুই ম্যাচ জয়ের ফলে আগেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছিল পাকিস্তান।
ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়ামে রবিবার দুপুরে টসে জিতে ব্যাটিং নিয়ে ৪৩.৪ ওভারে ১৬৭ রানে অলআউট হয় ভারত। জবাবে ৪৮.৫ ওভারে ১৫৭ রান তুলে ১০ রানের পরাজয় মানতে বাধ্য হয় সফরকারীরা।
মাত্র ১৬৮ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামা পাকিস্তানের ইনিংসের শুরুতেই আঘাত হানেন পেসার ভুবনেশ্বর কুমার। দলীয় ১৪ রানের মধ্যেই তিনি তুলে নেন পাকিস্তানের ২ উইকেট। মোঃ হাফিজের বদলে ব্যাটিং ওপেন করতে নামা কামরান আকমলকে (০) এলবিডব্লিউর ফাঁদে ফেলার পর ইউনুস খানকেও (৬) বোল্ড করেন কুমার।
টানা ১০ ওভার বল করে ২ মেডেনসহ ৩১ রানে ২ উইকেট নেন এই ডানহাতি পেসার। দলীয় ৬১ রানে পাকিস্তানের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান নাসির জামশেদকে এলবিডব্লিউ করে ম্যাচ জমিয়ে দেন ডানহাতি স্পিনার অশ্বিন।
৪র্থ উইকেটে পাকিস্তান অধিনায়ক মিসবাহ-উল-হক ও উমর আকমল ৫২ রানের জুটি গড়ে দলকে পাকিস্তানের জয়টাকে প্রায় সময়ের ব্যাপার করে দেন। ঠিক এই অবস্থায় মিসবাহকে ফিরিয়ে আবার ম্যাচ নিজেদের দিকে টেনে আনেন অশ্বিন।
৮২ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ৩৯ রান করা মিসবাহ আউট হওয়ার পর শোয়েব মালিক (৫) ও উমর আকমলও (২৫) সাজঘরে ফিরলে, ম্যাচ জমে ওঠে দারুণভাবে। ওপেনিংয়ের বদলে ৭ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন মোঃ হাফিজ। শেষদিকে হাফিজ-গুলের ধীর ব্যাটিংয়ে প্রয়োজনীয় রানরেট বেড়ে ব্যবধানটা বলের চেয়ে বেশি হয়ে যায়।
এ অবস্থায় যখন ২৩ বলে ২৪ রানের প্রয়োজন, তখন ইশান্ত শর্মাকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে লং অনে ধরা পড়েন গুল। ২৮ বল মোকাবেলা করে মাত্র ১১ রান করেন তিনি। বল হাতে ক্যারিয়ারসেরা রেকর্ড গড়লেও, ব্যাট হাতে নেমে দারুণভাবে ব্যর্থ হন সাঈদ আজমল। ৪৮ তম ওভারের ২য় বলে আজমলকে দিয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক উইকেটের স্বাদ পান অভিষিক্ত পেসার শামি আহমেদ।
পরের বলেই রান নেব কি নেব না করে রানআউটের শিকার হন সদ্য নামা জুনায়েদ খান। শেষ ১৫ বলে ১ উইকেট হাতে নিয়ে পাকিস্তানের জয়ের জন্য প্রয়োজন হয় ২৩ রানের।
ইশান্ত শর্মার করা ৪৯ তম ওভারটিতে ২টি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ম্যাচটাকে প্রায় বের করে নিয়েছিলেন হাফিজ। কিন্তু ওই ওভারের ৫ম বলে মিডউইকেটে যুবরাজের হাতে হাফিজ ক্যাচ দিলে শেষ হয়ে যায় সব নাটকীয়তা।
৩১ বলে ২ বাউন্ডারিতে ২১ রান করা হাফিজের আউটের সঙ্গে সঙ্গে যেন বিশ্বজয়ের আনন্দে মেতে ওঠে ভারতীয় শিবির।
ইশান্ত শর্মা ৯.৫ ওভার বল করে ৩৬ রানে ৩ উইকেট নেন। অশ্বিন ১০ ওভারে ১ মেডেনসহ ৪৭ রানে পান ২ উইকেট। কুমারের প্রথম ২ উইকেট ছাড়াও, অভিষিক্ত শামি আহমেদ ও রবীন্দ্র জাদেজার ঝুঁলিতে যায় ১টি করে উইকেট।
এর আগে দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলা স্টেডিয়ামে টসে জিতে সাঈদ আজমলের ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ের তোপে পড়ে ৪৩.৪ ওভারে মাত্র ১৬৭ রানে অলআউট হয় স্বাগতিক ভারত। আগের দুই ম্যাচে হারায় সিরিজ হারানো ভারতের সামনে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর লড়াই।
ভারতীয় ইনিংসে সর্বোচ্চ ৩৬ রান করেন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। অনুশীলনের সময় পিঠে চোট পাওয়ার পরও, ৬৩ রানে ৪ উইকেটে হারানো দলকে যথারীতি সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন অধিনায়ক।
এছাড়া সুরেশ রায়না ৩১ আর শেষদিকে রবীন্দ্র জাদেজার ব্যাট থেকে আসে ২৭ রান।
পাকিস্তানের ডানহাতি স্পিনার সাঈদ আজমল ৯.৪ ওভারে ১ মেডেনসহ ২৪ রানে নেন ৫ উইকেট। ওয়ানডে ক্রিকেটে এটাই আজমলের ক্যারিয়ারসেরা বোলিং ফিগার।
দীর্ঘদেহী পেসার মোঃ ইমরান ৭ ওভারে ১ মেডেনসহ ২৮ রানে পান ২ উইকেট। এছাড়া ১টি করে উইকেট যায় জুনায়েদ খান, মোঃ হাফিজ ও উমর গুলের ঝুঁলিতে।
এর আগে তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ম্যাচে চেন্নাইয়ে ৬ উইকেট এবং দ্বিতীয় ম্যাচে কলকাতায় ৮৫ রানে জয়ী হয়েছিল পাকিস্তান।