বার্তা৭১ ডটকমঃ
সংরক্ষিত আসনের এক মহিলা এমপির বাধারকারণে রাজধানীতে পণ্ড হয়ে গেছে রেলওয়ের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে জুরাইনের রেল গেইট সংলগ্ন এলাকায় ঘটে এ ঘটনা।
এর আগে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রেলওয়ের ঢাকা বিভাগীয় এস্টেটঅফিসার এস এম রেজাউল করীমের নেতৃত্বে রাজধানীর জুরাইনের রেল গেইট সংলগ্ন এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেন রেলওয়ের কর্মকর্তারা।
এক ঘন্টা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করার পর রেলওয়ের জমিতে অবৈধভাবে গড়ে উঠা টিপটপ হোটেল ভাঙ্গতে গেলে হঠাৎ সেখানে এসে উচ্ছেদ কাজে বাধা দেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সংরক্ষিত আসনের এমপি অ্যাডভোটেক সানজিদা খানম।
বুলডোজার দিয়ে শ্রমিকরা টিপটপ হোটেল ভাঙ্গতে গেলে সানজিদা খানম ওই হোটেলের মালিক কর্মচারীদের সাথে নিয়ে বুলডোজারের সামনে বসে পড়েন। এই সময় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যসহ রেলওয়ের এস্টেটঅফিসার তাকে সরে যাওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ করেন।
এস্টেটঅফিসার এস এম রেজাউল করীম সানজিদাকে বলেন, ম্যাডাম, আপনি এভাবে সরকারি কাজে বাধা দিতে পারেন না। একজন সংসদ সদস্য হয়ে আপনি অন্যায় কাজ করছেন। আপনি বুলডোজারের সামনে থেকে সরে যান। আমাকে সরকারি নির্দেশ পালন করতে দিন।
এ সময় এমপি সানজিদা খানম ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, আমি সরকারের প্রতিনিধি। আমি বলছি আপনারা পুলিশ নিয়ে চলে যান। আমি বেঁচে থাকতে এইখানে কোনো স্থাপনা ভাঙ্গতে পারবেন না। এই কথা বলে তিনি নিজে টিপটপ হোটেলের সামনে চেয়ার নিয়ে বসে পড়েন। এর মধ্যে রেলওয়ের জমিতে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা বিভিন্ন দোকানদার সানজিদার পক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন।
এই খবর ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ এলাকাবাসীসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির কয়েকশ নেতাকর্মী জড়ো হয়ে উচ্ছেদ অভিযানের পক্ষে স্লোগান দিতে থাকে। দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানের এক পযার্য়ে প্রায় শতাধিক পুলিশ এসে পরিস্থিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা চালায়।
পুলিশের ওয়ারী বিভাগের ডিসি এম ফরিদ উদ্দীন পোস্তগোলায় উপস্থিত হয়ে সানজিদাকে সরে যাওয়ার জন্য পুনরায় অনুরোধ করেন। কিন্তু ডিসির কথায়ও সানজিদা বুলডোজারের সামনে থেকে সরে না যাওয়ার কারণে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করে দিতে বাধ্য হনরেলওয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।
এ ব্যাপারে রেলওয়ের বিভাগীয় এস্টেটঅফিসার এস এম রেজাউল করিম বলেন, আমি সরকারি নির্দেশে জুরাইনে রেলওয়ের জমিতে অবৈধভাবে গড়ে উঠা স্থাপনা ভাঙ্গতে গিয়েছিলাম। উচ্ছেদ অভিযান চালানোর সময় স্থানীয় এলাকাবাসী আমাদের সার্বিক সহযোগীতা করেন। কিন্তু হঠাৎ সংরক্ষিত আসনের এমপি সানজিদা ম্যাডাম উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করার জন্য আমাকে অনুরোধ করেন। আমি তার কথা না শুনায় তিনি বুলডোজারের সামনে বসে পড়েন। যার কারণে আমরা উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ করে দিতে বাধ্য হই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা-নারায়গঞ্জ ডাবল রেললাইন সম্প্রসারণ করার জন্য রাজধানীর টিটিপাড়া থেকেনারায়নগঞ্জ স্টেশন পযর্ন্ত রেল লাইনের দুই ধারে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে রেলওয়ে। টিটিপাড়া থেকে জুরাইন পযর্ন্ত বিনা বাধায় উচ্ছেদ অভিযান চালানোগেলেও জুরাইনে বারবার বাধার সম্মুখিন হচ্ছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এর আগেও দুই বার জুরাইনের টিপটপ হোটেল উচ্ছেদ করার সময় বাধাদেন সানজিদা খানম। এ নিয়ে এলাকায় অসন্তোষ বিরাজ করছে।