বার্তা৭১ ডটকমঃ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের র্যাগিংয়ের নামে অর্ধনগ্ন করে রাতভর নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। গত বৃহস্পতিবার পরিচিত হওয়ার নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল এন্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সিনিয়র শিক্ষার্থীরা রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত তপোবন আবাসিক এলাকার একটি মেসে ডেকে নিয়ে অর্ধনগ্ন করে এ র্যাগিং এর ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
এদিকে র্যাগিং এর বিষয় প্রমাণিত হলে জড়িতদের কঠোর শাস্তির আওতায় নিয়ে আসবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন শাবি উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। তিনি আরো জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের উপর জিরো টলারেন্স আরোপ করা আছে।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী তপোবন আবাসিক এলাকার একটি মেসে রাত ১০টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত সিভিল এন্ড এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ছয় নবীন শিক্ষার্থীকে একই বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের কয়েকজন শিক্ষার্থী পরিচয়ের নামে রাতভর অর্ধনগ্ন করে মানসিক ও শারীরিক নিযার্তন করে। এক পর্যায়ে সিনিয়রদের কথা মতো বিভিন্ন ধরনের অশ্লীল কার্যকলাপ না করলে তাদের অর্ধনগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকী দেয়া হয়।
এক পর্যায়ে নবীন শিক্ষার্থীদের মারধর করেন সিনিয়ররা। র্যাগিং এর বিষয়গুলো কাউকে জানানো হলে আবারো মেসে ডেকে নেওয়া এবং শিক্ষাজীবনকে হুমকির মুখে ঠেলে দেয়া হবে বলে হুঁশিয়ারিও দেয় সিনিয়ররা।
ভুক্তভোগী কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, মারধর ও অর্ধনগ্নতার শিকার হওয়ায় এখন প্রচন্ড রকমের মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সিনিয়র শিক্ষার্থীদের হুমকির ভয়ে তারা এ বিষয়ে কোনো কথা বলতেও আগ্রহী নয়। এমনকি নিরাপত্তার ভয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর অভিযোগ পর্যন্ত দিতে পারছে না তারা। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে সিনিয়রদের এমন আচরণে বিস্মিত হয়ে পড়েছে তারা।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, র্যাগিং এ জড়িতদের মধ্যে সিভিল এন্ড ইনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জনিয়ারিং বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের ১৯ জন এবং পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের একই বর্ষের ১ জন শিক্ষার্থী জড়িত। এদের মধ্যে ৬ জন শিক্ষার্থী মারমুখী ও হিংসাত্মক ভূমিকায় ছিলো বলে জানা যায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমেদ জানান, শীঘ্রই শৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল এন্ড ইনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. মুশতাক আহমেদ বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। র্যাগিং এর বিষয়টি প্রমাণিত হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।