বর্তমান সরকারের অধীনে গাজীপুরের উপনির্বাচনসহ কোনো নির্বাচনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি।
সোমবার রাতে খালেদা জিয়ার সভাপতিত্বে বিএনপির সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত হয়।
সরকারদলীয় সংসদ সদস্য তানজিম আহমেদ সোহেল তাজের পদত্যাগের পর গাজীপুর-৪ (কাপাসিয়া) আসনে উপনির্বাচনেও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহর নির্বাচনী প্রস্তুতির মধ্যেই এই সিদ্ধান্ত এল।
বিএনপির মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি এই সরকারের অধীনে উপনির্বাচনসহ আর কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “গাজীপুর-৪ আসনের উপনির্বাচনে আমরা অংশ নিচ্ছি না। দলের কেউ এতে অংশ নিলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই বৈঠকে স্থায়ী কমিটির সদস্য হান্নান শাহও ছিলেন।
নির্বাচনে না যাওয়ার ক্ষেত্রে যুক্তি তুলে ধরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, “আমরা মনে করি, বর্তমান সরকারে অধীনে কোনো নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে না। আজকের বৈঠকে তাই গাজীপুর-৪ আসনের উপনির্বাচনসহ বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ নেতৃত্বাধীন বর্তমান নির্বাচন কমিশন গঠন আইনসম্মতভাবে হয়নি বলেও দাবি করেন ফখরুল।
আগামী জাতীয় নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনে করার দাবি জানিয়ে বিএনপি ইতোমধ্যে হুমকি দিয়েছে, তা না হলে নির্বাচনে যাবে না তারা।
ফখরুল বলেন, “সরকার সংবিধান থেকে নির্দলীয় সরকার পদ্ধতি তুলে দিয়ে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন করার বিধান সংযোজন করেছে। এই সংশোধনী বাতিলে বিরুদ্ধে বিএনপিসহ দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল আন্দোলন করছে। কারণ তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার বিরুদ্ধে।”
“আমরা এজন্য জনগণকে নিয়ে নির্দলীয় সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় আন্দোলনে আছি। আমরা মনে করি, এই দাবি সংবিধানে সংযোজন না হলে দেশের গণতন্ত্র বিপন্ন হবে,” যোগ করেন তিনি।
নির্দলীয় সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবিতে ঈদুল ফিতরের পর ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে বিএনপির ঘোষণা রয়েছে।
স্থায়ী কমিটির বৈঠকে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির পাশাপাশি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় ও জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয় পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হয় বলে বিএনপি নেতারা জানান।
স্থায়ী কমিটির বৈঠকে ছিলেন আর এ গনি, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, মাহবুবুর রহমান, তরিকুল ইসলাম, এম কে আনোয়ার, জমিরউদ্দিন সরকার, আ স ম হান্নান শাহ, সারোয়ারী রহমান, রফিকুল ইসলাম মিয়া, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান ও মির্জা ফখরুল।