বার্তা৭১ ডটকমঃ কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাবুর্চি বাজারে দোকান ঘর দখল নিয়ে দুপক্ষের সংঘর্ষে অন্তত নয়জন আহত হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার বাবুর্চি বাজারে একটি দোকান ঘর দখল নিয়ে আবুল খায়ের ও আবদুল জলিল এর মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছিল। আবুল খায়ের সোমবার সকালে দোকান ঘর খুলতে দেখে আবদুল জলিল কতিপয় লোকজন নিয়ে দোকান ঘরে হামলা চালায়। হামলায় উভয় পক্ষের আবুল খায়ের (৫০), মো. সবুজ মিয়া (৪২), দোকান কর্মচারী খোরশেদ (৩০), মো. জসিম (৪২), স’মিল মালিক হাফেজ মিয়া, সাইফুল ইসলাম (২৬), সালাহ উদ্দিন (১৭), ইসমাইল মিয়া (২৫), আবদুল খালেক (৩৫) আহত হন।
স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। অবস্থা বেগতিক দেখে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বাবুর্চি বাজারের লিটন স্টোরের মালিক আবুল খায়ের জানান, ২০১০ সাল থেকে লিটন স্টোর দোকান ঘরটি আবদুল জলিল এর কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। পাশেই আবুল খায়ের মালিকানার্দীন আরো একটি দোকান ঘর রয়েছে। ২০১২ সালে আবুল খায়ের জানতে পারে আরএস মূলে সে ওই দোকান ঘর ও জায়গাটির মালিক। তখন থেকে ভাড়া দেয়া বন্ধ করে দেয় এবং এ ব্যাপারে চৌদ্দগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ ও বিজ্ঞ আদালতে মামলা দায়ের করেন। বিজ্ঞ আদালত দীর্ঘ শুনানি শেষে মামলা চলাকালিন সময় পর্যন্ত উক্ত জায়গায় স্থীতি অবস্থায় রাখার নির্দেশ প্রদান করেন। আদালতের নির্দেশনা পেয়ে চৌদ্দগ্রাম থানা পুলিশ দোকান ঘরটিতে তালা ঝুঁলিয়ে দেন। পরবর্তীতে উভয় পক্ষকে জায়গার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সহ থানায় হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন।
আবুল খায়ের নির্ধারিত তারিখে থানায় হাজির হলেও আবদুল জলিল হাজির হননি। পরবর্তীতে আবুল খায়ের এর কাজপত্র দেখে স্থানীয় রমিজ আলী মেম্বার, লষ্কর মেম্বার, দেলোয়ার মাস্টার, সাবেক পুলিশ ফরিদ, আওয়ামী লীগ নেতা সিদ্দিক এর উপস্থিতিতে আবুল খায়েরের হাতে দোকানের চাবি হস্তান্তর করেন। থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার নির্দেশনা পেয়ে সোমবার সকালে আবুল খায়ের দোকান ঘর খুলতে দেখে স্থানীয় কতিপয় লোক তার কাছে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এতে প্রায় ৩০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়।
আবদুল জলিল জানান, আবুল খায়ের ২০১০ সালে ১৫ হাজার টাকা জামানতের মাধ্যমে মাসিক দুই হাজার টাকা ভাড়ায় তার কাছ থেকে দোকান ঘরটি ভাড়া নেয়। চুক্তি অনুযায়ী দুই বছর পর তাকে দোকান ঘরটি ছেড়ে দিতে বললে সে কতিপয় কাগজপত্র দেখিয়ে দোকান ঘরটির মালিকানা দাবি করে।
এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা উত্তম কুমার জানান, উক্ত জায়গাটি নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত বিরোধ চলে আসছিল। বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা চলছে। দোকান ঘর খুলে ব্যবসা পরিচালনা করার জন্য তাদেরকে বলা হয়নি এবং চাবিও দেয়া হয়নি। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।